Also read in

রামনগরে প্রীতম ভট্টাচার্য স্মৃতি সভাগৃহের শুভ উদ্বোধন

এক আবেগঘন অথচ আনন্দমুখর পরিবেশে রামনগরে অবস্থিত মনমোহন ঘোষ অনিল দাস মেমোরিয়াল কলেজে অনুষ্ঠিত হলো প্রীতম ভট্টাচার্য স্মৃতি সভাগৃহের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান। প্রয়াত প্রীতম ভট্টাচার্যের নামে প্রতিষ্ঠিত এই সভাগৃহ কলেজের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ কণাদ পুরকায়স্থ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গুরুচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিরঞ্জন রায়, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ দক্ষিণ আসাম প্রান্তের সংঘচালক জ্যোৎস্নাময় চক্রবর্তী, এবং সভাগৃহ নির্মাণের আর্থিক সহায়তাকারী তথা প্রীতম ভট্টাচার্যের পিতা ড. শঙ্কর ভট্টাচার্য। এছাড়াও অনুষ্ঠানে কলেজের শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বিপুল সংখ্যায় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কলেজের পরিচালক সঞ্জিত কুমার দাস অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন। তিনি সভাগৃহ নির্মাণের উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ কার্যকারিতা নিয়ে বিশদভাবে আলোকপাত করেন।

এরপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিরঞ্জন রায় বলেন, নতুন শিক্ষানীতি NEP 2020 ভারতের উচ্চশিক্ষায় নতুন পথ দেখাচ্ছে। তিনি প্রয়াত প্রীতম ভট্টাচার্যের ছাত্রজীবনের নানা স্মৃতিচারণা করেন এবং তাঁকে এক মেধাবী ও প্রতিভাবান শিক্ষার্থী হিসেবে অভিহিত করেন। তাঁর মতে, প্রীতম আজও সকলের স্মৃতিতে জীবন্ত।

সাংসদ কণাদ পুরকায়স্থ তাঁর বক্তব্যে কলেজের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি তিনি শিক্ষার প্রসার, আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও জাতি গঠনে নতুন প্রজন্মের দায়িত্বের উপর আলোকপাত করেন।

জ্যোৎস্নাময় চক্রবর্তী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষা কেবল ব্যক্তিগত উন্নতির পথ নয়; এটি একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের হাতিয়ার। তিনি শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার বার্তা দেন।

অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয় যখন ড. শঙ্কর ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, জীবনে মানুষ যত অর্থ-সম্পদই অর্জন করুক না কেন, মৃত্যুর সময় কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে না। তাই অর্থ-সম্পদকে সঠিক পথে ব্যয় করাই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা। তিনি জানান, সমাজের শিক্ষার প্রসারের জন্য কাজ করতে পেরে এবং তাঁর সহায়তায় ছাত্র-ছাত্রীরা সুফল পাচ্ছে—এটাই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ ও গর্বের বিষয়।

অনুষ্ঠানে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলের মন জয় করে নেয়। সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রয়াত প্রীতম ভট্টাচার্যের স্মৃতিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।

দিনব্যাপী এই স্মরণীয় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে।

এই শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে রামনগরের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিসরে এক নতুন আলোর দিগন্তের সূচনা হলো, যা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে উন্নত সমাজ গঠনের পথে।

Comments are closed.

error: Content is protected !!