ত্রিপুরা থেকে গাড়ি করে ১০ যাত্রী চলে এলেন দুধপাতিলে, গ্রামবাসীর সচেতনতায় পাঠানো হলো হাসপাতালে, প্রশ্নের মুখে প্রশাসন
ত্রিপুরার কুমারঘাট এলাকা থেকে দশ ব্যক্তি গাড়ি করে সোজা চলে এলেন বরখলা বিধানসভার অন্তর্গত দুধপাতিল গ্রামে। গ্রামবাসীর সচেতনতায় তাদের আটকানো হয় এবং এবার রামনগরের আইএসবিটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা চলছে। উত্তর-পূর্বের বাইরে থেকে কেউ এলে যেভাবে সোয়াব পরীক্ষা এবং সরকারি কোয়ারেন্টাইনে জন্য বাধ্যতামূলক, ত্রিপুরার ক্ষেত্রেও নিয়ম একই, কেননা রাজ্যটি রেড জোনে রয়েছে। অথচ সেই রাজ্য থেকে দশ ব্যক্তি সরকারি বাধা পেরিয়ে এসেও রামনগরের আইএসবিটিতে না গিয়ে বাড়িতে চলে গেলেন, এতে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে গোটা স্বাস্থ্যবিভাগ এবং প্রশাসন। তবে কি এভাবে সাধারণ মানুষ সরকারি আধিকারিকদের চোখ এড়িয়ে জেলায় ঢুকে পড়ছেন? রেড জোন এলাকার মানুষ গ্রামাঞ্চলে সহজে ঢুকতে পারলে আমরা কতটুকু সুরক্ষিত রয়েছি? এই প্রশ্ন জনমনে যাগছে।
স্থানীয় গাঁও পঞ্চায়েত প্রতিনিধি রঞ্জিত সরকারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তার কাছে আসাম-ত্রিপুরা সীমান্ত থেকে তারা যোগাযোগ করেন। ত্রিপুরার কুমারঘাট এলাকা থেকে ফিরছেন, বলে জানান। রঞ্জিত সরকার স্থানীয় বিধায়ক কিশোর নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের আসামে ঢোকার ব্যবস্থা করেন। কথা ছিল তারা রামনগরের আইএসবিটিতে যাবেন, কিন্তু সকাল আটটা নাগাদ তারা দুই গাড়ি করে ঢুকে পড়েন গ্রামে এবং সোজা চলে যান নিজের বাড়ির এলাকায়। দুধপাতিলের সুভাষনগর এলাকায় তাদের বাড়ি, তবে দুই গাড়ি করে এতজন লোক এসে ঢুকছেন দেখে স্থানীয় মানুষের সন্দেহ হয়। তারা এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করতেই জানতে পারেন ত্রিপুরার যাত্রীরা কোন সরকারি স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই এলাকায় এসে পড়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা যাত্রীদের স্থানীয় হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। প্রাথমিকভাবে কথাবার্তার পর যাত্রীরা সেখানে যেতে রাজি হন। তবে তিনজন যাত্রী নাম লেখানোর পর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। পরে আরেকটি এলাকায় মানুষ এই তিনজনকে আটক করে স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে তুলে দেন।
ডাক্তাররা প্রাথমিক চিকিৎসার পর বলেছেন এদের কোনও বাহ্যিক উপসর্গ নেই। তবে সম্প্রতি আসা আজমির শরিফের যাত্রীদের কোন বাহ্যিক উপসর্গ না থাকা সত্ত্বেও করোনার সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। ফলে এভাবে যাত্রীদের চলে আসা বিপদজনক।
ঘটনায় প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ। পাশাপাশি কথা উঠছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কার্যকলাপ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ত্রিপুরা থেকে দশজন লোক কোন ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই চলে গেলেন, অথচ স্বাস্থ্য বিভাগ বা পুলিশ তাদের আটকাতে পারল না। যদি স্থানীয় মানুষ সচেতন না হতেন এবং এই দশজনের মধ্যে কারো সংক্রমণ থেকে থাকে, তবে পুরো এলাকা কন্টাইন্মেন্ট জন হয়ে পড়তো। যদিও এই সম্ভাবনা এখনও রয়েছে, যদি এদের কারও পজিটিভ আসে তাহলে।
স্থানীয় গাঁও পঞ্চায়েত সদস্য বলেছেন এই ব্যক্তিদের অসমে ঢুকতে সাহায্য করেছেন বিধায়ক কিশোর নাথ। বিধান যদি তাদের সাহায্য করে থাকেন তাহলে পরে কেন তাদের রামনগরের আইএসবিটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন না? আর সরকারি এসওপি লোন করতে বিধায়ক কেনইবা সাহায্য করেন?
Comments are closed.