Also read in

বিচারের বাণী আজও এলো না, শতায়ু চন্দ্রধরের ভারতীয় নাগরিক হয়ে উঠাও হলনা

না, হল না; ১০২ বছর বয়সী চন্দ্রধর দাসের ভারতীয় নাগরিক হয়ে ওঠা এবারও হল না, বরং প্রতীক্ষার দিন বাড়লো। আশায় আশায় বুক বাঁধলেও সব আশায় জল ঢেলে দিল ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইবুনাল আজ তার প্রমাণপত্র সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ না হওয়ায় রায় দিতে অস্বীকার করে এবং প্রশাসনকে দাসের শরণার্থী কার্ড যাচাই করার নির্দেশ দেয়। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের একজন সদস্য বলেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আবার শুনানি হবে।

আজকের ঘটনায় স্বভাবতই চন্দ্রধর দাসের পরিবারের লোক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পুরো পরিবার আশা করে ছিল, আজই একটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে; চন্দ্রধরের কন্যা নিয়তি রায় হতাশার সুরে বললেন, “আজ সকালে বাবা ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে ছিলেন এবং আর মনে মনে আশায় বুক বেঁধেছিলেন, আজই তার ভারতীয় নাগরিক হওয়ার সৌভাগ্য ঘটবে। এমনকি আমরা সন্ধ্যায় মন্দিরে পুজো দেওয়ারও পরিকল্পনা করছিলাম। পুরো ব্যাপারটা দু মাস পিছিয়ে যাওয়ায় আমরা খুবই হতাশ হয়ে পড়েছি”।

চন্দ্রধর দাসের আইনি সহায়ক সৌমেন রায় বরাক বুলেটিনের সঙ্গে কথোপকথনে জানান, কেসের শুনানি পর্ব শেষ, এখন শুধু বিচারকের রায়ের অপেক্ষা। আমরা যাবতীয় কাগজপত্র এবং সাক্ষ্য-প্রমাণাদি জমা দিয়েছি। পুরো কেসটা ১৯৬৬ সালে দাসকে প্রদান করা সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেটের উপর ভিত্তি করে রয়েছে। এখন ট্রাইব্যুনাল সার্টিফিকেট যাচাইয়ের জন্য ত্রিপুরায় পাঠাতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে । এরপরই মামলাটির রায় দেওয়া হবে। এটি ত্রিপুরাতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কারণ, ত্রিপুরা রাজ্য সরকার কর্তৃক দাসের সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেটটি প্রদান করা হয়েছিল।

যিনি অবিভক্ত ভারতে জন্মে ১০০টি বছর পার করে এসেছেন, তার কাছে ভারত- বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ভৌগোলিক সীমারেখার কি মানে! কিন্তু তাকেও নিজের অস্তিত্বের জন্য লড়তে হচ্ছে! মানুষ যখন জীবনের এই পর্যায়ে এসে দু’দণ্ড শান্তিতে জীবন কাটাতে চায়, তখন চন্দ্রধরকে জীবনে টিকে থাকতে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে।

Comments are closed.