
৩৬ ঘন্টা অতিক্রান্ত, উধারবন্দের সপ্তদশী সাহিদা বেগমের এখনো কোন খোঁজ নেই ।
শুক্রবার সাতসকালে দুই সহপাঠির সাথে সাহিদা বেগম বড়ভূইয়া টিইশন ক্লাসে গিয়েছিল শিলচর মৌলভী রোডে কিন্তু এখনো বাড়ি ফিরে আসেনি। উধারবন্দ লাঠিগ্রামের বাসিন্দা সাহিদা এবার একাদশ শ্রেনীর পরীক্ষায় বসেছে । শুক্রবার সকালে তার বাবা উধারবন্দের বাস স্টপে তাকে দিয়ে যান, সেখান থেকে শিলচর অম্বিকাপট্টি মৌলভি রোডে সে তার ক্লাসে চলে যায়। গত এক বছর ধরেই ও সেখানে যাচ্ছে, তার বাবা ফয়েজ উদ্দিন বড়ভূইয়া আমাদেরকে জানান।
“আমি তার জন্য অন্যান্য দিনের মতো সদরঘাটে স্কুটি নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম যেখান থেকে তাকে প্রায়ই আমি বাড়ী নিয়ে যেতাম , কিন্তু শুক্রবার সে সেখানে ছিল না। আমি ভাবলাম যে সে হয়তো তার বন্ধুদের সাথে ফিরে আসবে এবং এই ভেবে আমি বাড়ী ফিরে আসি,” ফয়েজ উদ্দিন বলেন। কিন্তু তার অনুমান ভুল ছিল, সাহিদা বাড়িতে ফিরে আসেনি, ফয়েজ উদ্দিন ও অন্যান্য পরিবারের সদস্যরা তাকে ফোন করছিলেন কিন্তু ফোন নাগালের বাইরে ছিল । প্রায় ১টার সময় পরিবারের সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে , “আমরা সাম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজা শুরু করলাম, কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাইনি,” ফয়েজ উদ্দিন বললেন।
বিকাল প্রায় ৪ টার সময় উধারবন্দ পুলিশ স্টেশনে এফআইআর নিবন্ধিত হয়, ফয়েজ উদ্দিন বারকবুলেটিন ডটকমের সাথে কথোপকথনে উল্লেখ করেছেন যে তিনি উধারবন্দ পুলিশ চৌকি থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাননি। আজ পরিবারের সদস্যরা পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট রাকেশ রৌশনের সাথে দেখা করেন, “তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং জানান যে তিনি ইতিমধ্যেই উধারবন্দ পিএসের সাথে কথা বলেছেন” ফয়েজ উদ্দিন বলেন।
ফয়েজ উদ্দিন ও তার পরিবারের কারোর কাছে এখনও পর্যন্ত কেউ কোন মুক্তিপণ দাবি করেনি। শুভানুধ্যায়ীরা ফেসবুকে ফয়েজ উদ্দিনের মোবাইল নং সহ মেয়ের ছবি পোস্ট করেছেন যাতে তার নিখোজ কন্যাকে ফিরে যেতে সাহায্য হয়। কিন্তু খুব ভীতিকর এবং অমানবিক ব্যাপারটি হল যে, গত রাতে পরিবারের সদস্যদেরকে ফোনে অনেকেই আজেবাজে মন্তব্য করছে এবং তাদেরকে দোষারোপ ও করছে । “আমি এমনিতেই গভীর ভাবে মর্মাহত , ফেসবুকে আমার নম্বর পোস্ট করা হয়েছিল এই ভেবে যে এতে আমার মেয়েকে ফিরে পেতে সাহায্য হবে, কিন্তু মানুষ আমাকে নিয়ে মজা করছে এবং সমালোচনা করছে, এতে এই এলাকার লোক ও আছে।”
সাহিদা বেগম বারভূইয়া ২৫ শে নভেম্বর, ২০০০ তারিখে জন্মগ্রহণ করে এবং তাই এখনও সে নাবালিকা ।সে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি অর্জন করে উধারবন্দ ডি এন এইচ এস স্কুল থেকে একাদশ শ্রেনীর ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে। “আমরা এসপি, রাকেশ রৌশানের কাছে গিয়েছিলাম এবং তিনি আমাদের জানান যে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েকে উদ্ধার করার চেষ্টা করবে।”
বরাকবুলেটিন.কম এই অবস্থায় পরিবারটিকে পরিহাস না করার আহ্বান জানাচ্ছে। এছাড়াও, এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ঘটনা, তাই দয়া করে অনুমানের উপর কিছু করবেন না যতক্ষণ না মেয়েটির খোঁজ পাওয়া যায়। আমরা এই প্রতিবেদনের সাথে মেয়েটির একটি ছবি দিয়েছি, যদি আপনারা কোথাও তাকে দেখতে পান বা তার কোন খবর পান তবে নিকটবর্তী পুলিশ চৌকিতে অবশ্যই জানাবেন।
Comments are closed.