রংপুরে ক্রুজারের ধাক্কায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ১৮ বছরের প্রিয়া, প্রতিবাদে শিলচর মনিপুর রোড অবরোধ স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতার
দ্রুতগতিতে ছুটে আসা ক্রুজারের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ১৮ বছরের প্রিয়া রবিদাস। সংকটজনক অবস্থায় তাকে স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শিলচরের রংপুরে, মনিপুর রোডে।
স্থানীয়দের মতে, দ্রুত বেগে আসা ক্রুজার টি ট্রাফিক আইন অমান্য করে প্রিয়াকে এসে ধাক্কা মারে। ঘটনার পরই ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করেন। এর ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে যান চলাচল। রাস্তার দু দিকে প্রায় শতাধিক গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। সড়ক অবরোধ তুলতে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে যান ট্রাফিক পুলিশ ইনচার্জ, রংপুর পুলিশ আউটপোস্ট এর ইনচার্জ এবং প্রশাসনের কর্তারা।
এই ঘটনায় ক্ষোভ ব্যক্ত করে বজরং দলের মিঠুন নাথ বলেন, ‘ক্রুজার চালকরা সবসময়ই ট্রাফিক আইন অমান্য করে। রংপুরে ক্রুজারের একটা স্ট্যান্ড থাকা সত্ত্বেও ক্রুজারের ড্রাইভাররা যেখানে সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলেন। এর জন্যই আজ প্রিয়া রবিদাস কে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হলো। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে তাকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হচ্ছে।’ নাথ আরো বলেন, ‘এমন দুর্ঘটনা কিন্তু এই প্রথম নয়, আগেও হয়েছে। এই রোডেই হয়েছে। এ নিয়ে আমরা আগেও আন্দোলন করেছিলাম। প্রতিবাদ জানিয়ে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে মেমোরেন্ডাম তুলে দিয়েছিলাম।’
মিঠুন নাথ জানান, নিয়ম অনুসারে শহরের মধ্যে কোনো মোটর স্ট্যান্ড থাকার কথা নয়। কিন্তু শিলচর পৌরসভার এই ৪ নং ওয়ার্ডে নিয়মিতভাবে যানজট লেগে থাকে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই ক্রুজার স্ট্যান্ড। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘কিসের জন্য এই স্ট্যান্ড এখানে রয়েছে। কার নির্দেশে এই স্ট্যান্ড? আমরা এই স্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে শীঘ্রই পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
প্রিয়া রবিদাসের মা জানান, তিনি তার মেয়ের জন্য ন্যায় বিচার চাইছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। ঘটনার পর ক্রুজার চালক গাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এই মোটর স্ট্যান্ড এর কর্মকর্তারা সেই গাড়ি চালক সম্পর্কে সবকিছু জানেন। কিন্তু ওরা মুখ খুলছেন না।’ কান্না ভেজা গলায় প্রিয়ার মা বলেন, ‘আমি ন্যায়বিচার চাই। সেই ড্রাইভারকে কড়া শাস্তি দিতে হবে। সেইসঙ্গে গাড়ির মালিক কে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
ঘটনার কয়েক ঘন্টার পর প্রশাসনের কর্তারা ক্ষুব্ধ স্থানীয়দের বুঝিয়ে-সুজিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করান। মিঠুন নাথ বলেন, ‘ওরা আমাদের কথা দিয়েছেন কাছাড় জেলা প্রশাসন প্রিয়ার চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবে। দরকার হলে প্রিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটিতে ও পাঠানো হবে। সেইসঙ্গে ড্রাইভার এবং স্ট্যান্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের কাছ থেকে এমন নিশ্চয়তা পাবার পরই আমরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করি।’
Comments are closed.