Also read in

শিলচরে আটক ১৯ সহ ফিরে গেলেন মায়ানমারের ২৭ জন অনুপ্রবেশকারী, দেশে ফিরলেন ৩৪ জন ভারতীয়

লকডাউন পরবর্তী সময়ে আবার ভারতে আটক বিদেশী অনুপ্রবেশকারীদের পাঠাতে শুরু করেছে কেন্দ্র সরকার। সম্প্রতি শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এবার শিলচরে আটক ১৯ জন সহ মোট ২৭ জন মায়ান্মারের নাগরিককে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার মণিপুরের মোরে সীমান্ত দিয়ে এদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে মায়ান্মারের আটক ৩৪ জন ভারতীয় নাগরিককে এদিন ফেরত আনা হয়েছে। দুপুর বারোটা নাগাদ আন্তর্জাতিক সীমান্ত খুলে দেওয়া হয় এবং দুই পক্ষের নাগরিকরা নিজেদের দেশে ঢুকে পড়েন। কেন্দ্র সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে কাজটি হয়েছে। এতে স্থানীয় সরকারি আধিকারিকরা তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

কাছাড়ের ডিএসপি (সদর) সঞ্জীব ভার্গব গোস্বামীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শিলচরে আটক ১৯ জন অনুপ্রবেশকারী মায়ান্মারবাসীদের নিয়ে বুধবার রাতেই মনিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাতে সেখানে পৌঁছে তারা অপেক্ষা করে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দীদের পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। শিলচর ছাড়াও মণিপুরে আরও আটজন মায়ান্মারের অনুপ্রবেশকারী আটক ছিলেন। তাদেরও একই সঙ্গে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

শিলচরে কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিটেনশন ক্যাম্পে যে ১৯ জন বন্দি ছিলেন তারা হলেন সুন্দরলাল (২৫), সঞ্জয় (২০), জয়কুমার (২৩), রামবকান(২২), ধর্মেন্দর (২৯), অন্নি কুমার (২৯), রাজকুমার (৩০), মনিলাল (২৪), অনিল কুমার (২২), জয়শঙ্কর (২৯), থুরা(২০), কানাইলাল (৩০), দয়া চাঁদ (৩০), সুনীল কুমার ওরফে সোনি কুমার (২৫), অজয় কুমার (২৫), দিনাত ওরফে দীনেশ(২৫), কানাইয়া লাল ওরফে সোনিলাল(২৪), সঞ্জয় কুমার ওরফে সাজন (৩০) এবং সঞ্জয় রবিদাস (২৬)। তারা সবাই মায়ান্মারের কায়ূকতাগা এবং পায়ো জেলার বাসিন্দা।

সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, লকডাউন চলাকালীন সময়ে তারা অসম হয়ে মণিপুরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল, সেখানেই আটকা পড়ে। গত মে মাসের শেষের দিকে জিরিঘাট হয়ে মণিপুরে যাওয়ার সময় ধরা পড়েছিল তারা। কোনও নথি ছাড়া এরা ভারতে ঢুকেছিল এবং মণিপুর ও অসম হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌছে গেছিল। এদের মধ্যে একাংশ উত্তরপ্রদেশের ফারুকাবাদে একটি কারখানায় কাজ করছিল। লকডাউনের ফলে কাজের সুযোগ হাতছাড়া হয় এবং দেশে ফেরার জন্য আবার অসম হয়ে মণিপুর ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে আটকা পড়ে। দেশে ফেরার জন্য ফারুকাবাদ থেকে জিরিঘাট পর্যন্ত এসেছিল তারা। উদ্দেশ্য ছিল মণিপুরে ঢুকে মোরে হয়ে মায়ান্মারে ফিরে যাবে। কিন্তু মণিপুরে ঢোকার পথে-জিরিঘাটে ধরা পড়ে যায় পুলিশের হাতে। পরে আদালতের বিচারে অবৈধভাবে ভারতে ঢোকার অপরাধে সবাইকে চার মাস করে কারাবাসের সাজা শোনানো হয়। সাজার মেয়াদ শেষে ১৯ জনকে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে রাখা হয় ডিটেনশন ক্যাম্পে।

তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় যখন ভারত সরকার মায়ানমারের সরকারের সঙ্গে এব্যাপারে যোগাযোগ করে। মায়ান্মার সরকার সবকিছু খতিয়ে দেখে এদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়। কথাবার্তার মাধ্যমে একটি দিন ঠিক করা হয়। ভারতে আটকে পড়া ২৭ জনকে মায়ান্মারে ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি সেই দেশে আটকে পড়া ৩৪ জন ভারতীয় নাগরিককে ফেরত আনা হয়েছে।

Comments are closed.