পুলিশের সহায়তায় সড়ক অবরোধ আংশিক খুললেও মিজোরা অসমের জমি না ছাড়লে অবরোধ প্রত্যাহার হচ্ছেনা
রবিবার কেন্দ্র সরকারের মধ্যস্থতায় অসম এবং মিজোরাম সরকারের মধ্যে আলোচনা হয় এবং মিজোরাম সরকারের মুখ্য সচিব কথা দেন তারা অসমের জমি থেকে তাদের পুলিশ বাহিনী সরিয়ে নেবেন। তবে তাদের পাল্টা দাবি ছিল, অসম সরকারকে কাছাড়, হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক অবরোধ হঠাতে হবে। কথামতো সোমবার সকাল থেকেই পুলিশের সহায়তায় আটকে পড়া ট্রাকগুলো মিজোরাম পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। ডিআইজি দিলীপ কুমার দে-র নেতৃত্বে সোনাই রোডের মিজোরাম হাউজ সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় কুড়িটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যবোঝাই ট্রাক মিজোরাম পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ডিআইজি বলেন, “কেন্দ্র সরকারের বাহিনী মিজোরাম এবং অসম সীমান্তে রয়েছে। তারা গতকাল উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মিজোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা আমাদের জমি ছাড়বেন। তবে সরকারের উদ্যোগে অবরোধ হয়নি, সাধারণ মানুষ বিভিন্ন কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে কাজটি করছেন। আমরা সরকারের নির্দেশে পর্যাপ্ত সুরক্ষার মাধ্যমে আটকে পড়া ট্রাকগুলো গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। একইভাবে সেই রাজ্যে আটকে পড়া ট্রাকগুলো কিভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে, এটা নিয়ে আমাদের চেষ্টা চলছে।”
টানা ১২দিন ধরে অর্থনৈতিক অবরোধ চলার পর মিজোরামের পক্ষ থেকে কিছুটা সুর নরম হয়। আগে দুই রাজ্যের গৃহসচিব স্তরের বৈঠক হওয়ার পরও মিজোরাম কথা রাখেনি। এরপর অর্থনৈতিক অবরোধ হয়। এরমধ্যে অসমের দুটি সরকারি বিদ্যালযয়ে বোমা মারা হয়েছে, এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দুষ্কৃতীরা কাছাড়ের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে বন্দুক দেখিয়ে এলাকা থেকে চলে যেতে বলেছে। রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা দেবব্রত শইকীয়া এবং কাছাড়ের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেবের ওপর গুলতি এবং মার্ভেল দিয়ে হামলা করা হয়েছে দুষ্কৃতীদের দ্বারা। শেষমেষ রবিবার সন্ধ্যাবেলা কেন্দ্র সরকারের গৃহসচিব অসম এবং মিজোরামের মুখ্যসচিবকে নিয়ে একটি আলোচনা করেন। মিজোরাম সরকার রাজি হয় অসম ভূমি থেকে তাদের পুলিশ উঠিয়ে নিতে। ফলে অবরোধকারীরা আংশিক নরম হলেও তারা পুরোপুরি অবরোধ তুলে দিতে রাজি হননি। তারা বলেন, “বেশ কয়েকবার মিজোরাম সরকার কথা দিয়ে কথা রাখেনি তাই আমরা তাদের উপর আর চোখ বুজে বিশ্বাস করছি না। দুই রাজ্যের সরকার আলোচনা করেছেন, তাদের সম্মান জানিয়ে আমরা কিছুটা ট্রাক যেতে দিচ্ছি। তবে অসমের জমি থেকে পুরোপুরিভাবে মিজোরামের পুলিশ সরে গেলেই অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে দেওয়া হবে।”
আংশিক পুলিশ সরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও মিজোরাম সরকার এখনও অসমের দখল করা জমিকে নিজেদের জমি বলে দাবি করছে। তারা পুরোপুরিভাবে এলাকা থেকে সরছেনা, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী। ফলে পরিস্থিতি এখনই স্বাভাবিক হয়ে যাবে এমনটা আশা করা যাচ্ছে না।
Comments are closed.