৩১৩ কিলোমিটার লম্বা গ্রিন করিডোর বানিয়ে গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়া হবে শিলচরের রোগীকে
শিলচর শহরের অম্বিকাপট্টি এলাকার বাসিন্দা ৭১-বছর বয়সের ইরা চৌধুরী ‘এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া’ সহ অন্যান্য রোগ নিয়ে মেহেরপুরের জীবন জ্যোতি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তা স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটির নিমকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এযাবত সবথেকে লম্বা গ্রিন করিডোর গড়ে তোলা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় জীবন জ্যোতি হাসপাতাল থেকে গুয়াহাটির নিমকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত ৩১৩ কিলোমিটার লম্বা গ্রিন করিডোর গড়ে তোলা হবে। কাছাড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার পরিবারকে এর জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ বিভাগকে গ্রিন করিডোর গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কাছাড় জেলার পুলিশ সুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর জানিয়েছেন, শিলচর থেকে ৬-নম্বর ন্যাশনাল হাইওয়ে দিয়ে মেঘালয় হয়ে গুয়াহাটি পৌঁছোবে বিশেষ এম্বুলেন্সটি। সঙ্গে থাকবে পরিবারের সদস্যদের আরেকটি গাড়ি। পুলিশ বিভাগ কাছাড় জেলার সীমানা পর্যন্ত গ্রিন করিডোর গড়ে তোলার দায়িত্ব রয়েছে। তারা এজন্য একটি বিশেষ দল সঙ্গে পাঠাবেন। এছাড়া প্রত্যেক এলাকায় আগে থেকেই পুলিশ বিভাগের লোকেরা থাকবেন। মেঘালয় সীমানায় ঢোকার পরেও কাছাড়ের পুলিশ বিভাগ সেখানের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে যাতে রাস্তায় কোনও ধরনের অসুবিধে না হয়। আবার যখন অসমের সীমানায় এম্বুলেন্স ঢুকবে সেখানে রাজ্যের পুলিশ গাড়িটি নির্বিঘ্নে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।
ইরা চৌধুরীর ছেলে সৌমেন চৌধুরি সম্প্রতি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শে সিদ্ধান্ত নেন তার মাকে গুয়াহাটির নিমকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। চিকিৎসকদের অনুমতি নিয়েই তিনি প্রশাসনের কাছে আবেদন রাখেন, এই যাত্রার জন্য যাতে গ্রিন করিডোর গড়ে তোলা হয়। এর আগেও তিনবার কাছাড় জেলায় গ্রিন করিডোর বানানো হয়েছিল, এটা চতুর্থ নিদর্শন। তবে আগের তিনবার হাসপাতাল থেকে শিলচর বিমানবন্দর পর্যন্ত গ্রীন কোরিডোর গড়ে তোলা হয়েছিল, তখন বিশেষ বিমানে রোগীদের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। ইরা চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে তাকে বিমানে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেননি চিকিৎসকরা। ফলে বিশেষ এম্বুলেন্সের মাধ্যমে সড়কপথে তাকে গুয়াহাটি স্থানান্তর করা হচ্ছে। এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের সবথেকে লম্বা গ্রিন করিডোর হতে চলেছে।
কাছাড় জেলা প্রশাসনের তরফে জারি করা নির্দেশের কপি মেঘালয় রাজ্যের নোডাল অফিসারের কাছেও পাঠানো হয়েছে। তাদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে যখন বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সটি অসমের সীমান্ত পেরিয়ে তাদের রাজ্য ঢুকবে, সেখানে যাতে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া মেঘালয়ের পর যখন কামরূপ জেলায় যাবে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সটি, তখন যাতে অসুবিধা না হয়, এইজন্য সেই জেলার প্রশাসনকে একটি কপি পাঠানো হয়েছে।
Comments are closed.