বৃহস্পতিবার কাছাড়ে কোভিড পজিটিভ প্রায় অর্ধশতক , জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়ালো হাজারের মাত্রা
প্রায় তিন মাস আগে কাছাড় জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছিল, বৃহস্পতিবার জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের মাত্রা অতিক্রম করেছে। এদিন জেলায় মোট ৪৪ জন ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এতে জেলায় এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০০৬ জন। এর মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়েছেন এবং কিছু ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পরও কিছু ব্যক্তির শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
বৃহস্পতিবার মোট ৪৪ জন ব্যক্তি কাছাড় জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে এটি সবথেকে কম সংখ্যা। গত শনিবার ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন, এদিনই প্রথমবারের মতো সংখ্যা একশোর কাছাকাছি দাঁড়ায়। সোমবার ১১৩ জন আক্রান্ত হন, মঙ্গলবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৯ জন। বুধবার ৮৮ জন এবং বৃহস্পতিবার ৪৭ জন ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে কাছাড় জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০০৬ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। করোনা ভাইরাসের জন্য এখন পর্যন্ত জেলায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, এছাড়া আরও ৫ জন ব্যক্তির শরীরে মৃত্যুর পর করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে কিছু মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ রয়েছেন, যারা আক্রান্ত চিকিৎসকের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এছাড়া সেনা জওয়ান, অন্য রোগীর কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ে আসা কিছু ব্যক্তি, চা বাগান কর্মী, এবং বাইরে থেকে ফেরা যাত্রীরাও রয়েছে এদিনের তালিকায়।
ইতিমধ্যে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গেছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, পুলিশ, সাংবাদিক, সেনা জওয়ান, ব্যবসায়ী, চা বাগান কর্মী, সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই রয়েছেন। এবার মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ গোষ্ঠীতেও সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। শিলচর মেডিকেল কলেজের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মী ছাড়াও তাদের সংস্পর্শে আসা অনেকে পজিটিভ হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জেলার প্রত্যেক মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের উদ্দেশ্যে বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কোনো চিকিৎসকের সংস্পর্শে না যান।
ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পরীক্ষা করিয়ে অনেকে পজিটিভ হয়েছে। সার্ভিলেন্স প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের সনাক্ত করা হয়েছিল। এরা হলেন মাছিমপুরের রাকেশ রঞ্জন, কাঁঠাল রোডের দস্তক বর্মন, মালুগ্রামের বিশ্বজিৎ পাল, শিবালিক পার্কের অলকেশ চক্রবর্তী। বাংলাঘাট কোভিড ট্রেনিং সেন্টারে পরীক্ষা করিয়ে মতি রায় পজিটিভ হয়েছে। এছাড়া জিরিঘাট এলাকার ১২ জন লোক পজিটিভ হয়েছেন।
আসাম রাইফেলসের কয়েকজন জওয়ান আক্রান্ত হয়েছেন। রেপিড টেস্টিং কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা করিয়ে সনাক্ত হওয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন, আসাম রাইফেলস এর রাম শিরপালি, বদরঘাট এলাকার রমাকান্ত দেব, তারাপুরের প্রদীপ দাস, কুয়ারপার এলাকার গৌতম আকুরা, এবং বিজয় কৃষ্ণ চক্রবর্তী।
কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে সনাক্ত আক্রান্তরা হলেন, পুলিশ রিজার্ভ এর বনশ্রী অর্জুন কানুনগো, ন্যাশনাল হাইওয়ে রোডের নতুন গুহ, নরসিংটোলার সঙ্গীতা নন্দিমজুমদার, পয়লাপুলের আসাম রাইফেলসের রমসিপালি, অবধেশ কুমার, সোনাই রোডের পূলক চন্দ্র দে, ক্ষুদিরাম সরণি ঝর্না দে , রাধা সূত্রধর, গোপাল চন্দ্র দে। তারাপুরের জয়প্রকাশ কানু, পার্থপ্রতিম পাল, শ্যামানন্দ লেনের অভিষেক দাস, শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী রামলাল নুনিয়া, হাসপাতালের কোয়ার্টারের অনুকূল সিংহ এবং পাইথেমাই এদিন পজিটিভ হয়েছেন।
এদিন আক্রান্তদের মধ্যে বিমানযাত্রীরা হলেন, ব্যাঙ্গালোর থেকে ফেরা ফিজবুর রহমান, কমরুল ইসলাম লস্কর, পাথারগ্রামের গিয়াস উদ্দিন বরভুইয়া, ডার্বি চা বাগানের কর্মী ওম প্রকাশ, উজানগ্রামের দিলদার হোসেন মজুমদার এবং মাসিমপুর সেনা ছাউনির সাবির আহমেদ।
Comments are closed.