কাছাড়ে শুরু হলো নিউমোকক্যাল কনজুগেট ভ্যাকসিন প্রদান (পিসিভি), ৪৫ হাজার শিশুকে দেওয়া হবে টিকা
সারা রাজ্যের সঙ্গে কাছাড় জেলায় বুধবার শুরু হয় শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া মেনিনজাইটিস প্রতিরোধী টিকা প্রদান। এদিন শিলচরের সতীন্দ্র মোহনদেব সিভিল হাসপাতাল চত্বরে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলাশাসক কীর্তি জল্লি। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলার অন্যান্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। প্রথম পর্যায়ে জেলার ৪৫ হাজার শিশুকে এই টিকা প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি শ্বাসজনিত রোগের প্রতিরোধী টিকা হিসেবে নিউমোকক্যাল কনজুগেট ভ্যাকসিন (পিসিভি) দেওয়া হয়। কীর্তি জল্লি জানান, জেলার সবগুলো সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিনামূল্যে শিশুদের জন্য এই টিকা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “আমরা কাছাড় জেলায় ৪৫ হাজার শিশুকে প্রাথমিক পর্যায়ে এই টিকা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। শিশুর জন্মের ষষ্ঠ সপ্তাহে প্রথম ডোজ এবং ১৪ নম্বর সপ্তাহে দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে। নবম মাসে বুস্টার ডোজ প্রদান করা হবে। প্রত্যেক শিশুকে বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে এবং জেলার সবগুলো সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকাকরণ চলবে। আমরা প্রত্যেক শিশুর মা-বাবার উদ্দেশ্যে বলছি, আপনারা কোনভাবেই এই টিকা নেওয়া থেকে নিজেদের শিশুদের বঞ্চিত করবেন না। বিশেষ করে যেসব মেয়েরা শিশুদের স্তন্য পান করাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনারা সময়মতো শিশুকে পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।”
এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক যুগল কৃষ্ণ রাজবংশী, স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক বিমল জ্যোতি শিকিদার, অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ পিকে রায়, ডব্লিউএইচও-র প্রতিনিধি ডাঃ বিনায়ক সহ অন্যান্যরা।
অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ পিকে রায় বলেন, “এই টিকার কোনও ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। ২০১৭ সাল থেকে উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমাচল প্রদেশ সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে এই টিকা প্রদান প্রক্রিয়া চলছে।” তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুদের জন্য করোনার কোনও টিকা প্রদানের ব্যবস্থা নেই। পিসিভি টিকা দেওয়া ফলে শিশুদের শরীরে অতিরিক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে যেটা হয়তো করোনার বিরুদ্ধেও তাদের লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। তবে এটা এখনও পরিষ্কার করে বলা যাবেনা।”
ডব্লিউএইচও-র প্রতিনিধি ডাঃ বিনায়ক বলেন, প্রথম টিকা নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নেবার মধ্যে সর্বাবস্থায় দুই মাস সময়ের ব্যবধান থাকতে হবে।দেড় মাস বয়স থেকে শিশুদের এই টিকার ডোজ নেওয়া শুরু করা যেতে পারে। প্রত্যেক মা-বাবাকে এব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে, কেউ যাতে এই টিকা থেকে বঞ্চিত না হয়। এক বড় লক্ষ্য নিয়ে ভারত সরকার এই কাজটি শুরু করছে এবং তার পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই কঠিন পরিস্থিতিতে শিশুদের জন্য এখনও কোনও আলাদা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। ফলে শিশুদের যেসব টিকা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে, তার থেকে যেন তাদের কোনওভাবেই বঞ্চিত করা না হয়।”
এদিন অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিজেদের শিশুকে নিয়ে মা-বাবারা এসে টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Comments are closed.