গত ২৪ ঘন্টায় শিলচর মেডিক্যালে করোনায় মারা গেলেন ৫ ব্যক্তি
করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে এবং গত বছরের তুলনায় এবার মৃত্যুর হার বেশি। এই বছরের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৬০ জন, এর মধ্যে ওয়ার্ডে রয়েছেন ১২৩ জন এবং আইসিইউতে রয়েছেন ৩৭ জন। ৪০ জন ব্যক্তি অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন এবং ১০ জনকে রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে, অর্থাৎ তাদের অবস্থা সংকটজনক।
হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু করে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা মনে করছেন মৃত্যুর সংখ্যা যেকোনও সময় বাড়তে পারে।
যাদের মৃত্যু হয়েছে এরা হলেন, করিমগঞ্জের শেখর চন্দ্র দাস, শিলচর দ্বিতীয় লিংক রোডের মৃদুল কান্তি রায়, ইটখলার সুখ সাগর দত্ত, কাছাড় জেলার গঙ্গানগরের প্রভাস চক্রবর্তী এবং শিলচরের দেবী কানুনগো।
করিমগঞ্জ বনমালী রোডের বাসিন্দা শেখর চন্দ্র দাস ১ মে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়েছে, মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
শিলচরের দ্বিতীয় লিঙ্ক রোডের বাসিন্দা মৃদুল কান্তি রায় ৩ মে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং তার শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছিল। তিনিও বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন, মৃত্যুকালে বয়স ছিল ৫০ বছর।
মালুগ্রাম ইটখলার বাসিন্দা সুখ সাগর দত্ত বৃহস্পতিবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। শরীরে অন্যান্য সমস্যা ছাড়াও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছিল। ফলে তার মৃত্যুকে কোভিড মৃত্যু বলে গণ্য করা হয়েছে।
শিলচরের বাসিন্দা দেবী কানুনগো গতকাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আজ দুপুর ১ টা ৩৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
শুক্রবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মারা গেছেন ৫ জন ব্যক্তি, এরমধ্যে সর্বশেষ হলেন ধলাই অঞ্চলের মতিনগর সংলগ্ন গঙ্গানগর এলাকার বাসিন্দা প্রভাত চক্রবর্তী। তিনি এদিন বিকেল ৫ টা ৫০ মিনিটে মারা গেছেন। তার বয়স ছিল ৮২ বছর এবং প্রায় চার দিন ধরে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিন বিকেল পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ৪৯ জন এবং আরটিপিসিআর পরীক্ষায় ৪১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। হাসপাতালে নতুন ১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ৭ জন ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এছাড়া ৩৭ জন লোক নিজের দায়িত্বে হোম আইসোলেশন নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
শুক্রবার মোট ২৫৬ জন বিমানযাত্রীর কোভিড পরীক্ষা হয়েছে, এতে ১২ জনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। ধীরে ধীরে রেলযাত্রীদের কোভিড পরীক্ষা শুরু হলেও এতে দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের চরম উদাসীনতা। প্রায় বেশিরভাগ যাত্রীই নিজের ইচ্ছেমত পরীক্ষা না করেই স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার প্রায় ৩০ জন যাত্রীর পরীক্ষা হয় এবং একজন পজিটিভ হন। তবে এতেও প্রশাসনের মনোভাবের ওপর কোনও প্রভাব পড়েনি। যাত্রীরা যখন-তখন পরীক্ষা না করেই বেরিয়ে যেতে পারছেন।
Comments are closed.