Also read in

ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা শিলচর, নিবেদিতা লেনের ৭০-বছর বয়সের করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের

নিজের ঘরে গলায় ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন ৭০-বছর বয়সের করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে শিলচর শহরের হাইলাকান্দি রোড এলাকার নিবেদিতা লেনে। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ এলাকার লোকেরা হঠাৎ করেই এক মহিলার কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। খবর নিয়ে দেখা যায় নিবেদিতা লেনের ২৬ নম্বর বাড়িতে এক প্রৌঢ় আত্মহত্যা করেছেন। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন এবং তাকে হোম আইসোলেশন থাকতে দেওয়া হয়েছিল। ফলে এলাকাবাসীরা এগিয়ে গিয়ে কোনও সাহায্য করতে পারছেন না। তারা পুলিশ এবং স্বাস্থ্যবিভাগের কাছে খবর জানিয়েছেন।

প্রায় দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ বা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা মৃতদেহ উদ্ধারে আসেননি। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তারা জানান, যেহেতু লোকটি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, তাকে উদ্ধার করতে হলে পিপিই কিট সহ অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে এলাকায় আসবেন পুলিশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এলাকার বাসিন্দা আশিষ রায় জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তির নাম সুজন কান্তি বিশ্বাস, তার বয়স ৭০ বছর। প্রায় তিন বছর ধরে এলাকার নিখিলেশ রায়ের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার সঙ্গে থাকেন বোন চন্দনা বিশ্বাস। দুজনেই বিবাহিত, ফলে তাদের সন্তান বা পরিবারের অন্য কোনও সদস্য নেই। সুজন কান্তি বিশ্বাস রাঙ্গিরখাড়ি এলাকায় এক দোকানে কাজ করেন এবং তার বোন গানের শিক্ষিকা। গত শুক্রবার জানা যায় তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে বাড়িতেই থাকতে দেওয়া হয়েছিল।

প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ঝুলন্ত মৃতদেহের পাশে বসে আছেন চন্দনা বিশ্বাস। এলাকাবাসীরা দূর থেকে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সুজন কান্তি বিশ্বাস লকডাউনের ফলে প্রথম থেকেই কিছুটা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। তবে বাড়িতে আটকে পড়ার পর আরও ভেঙে পড়েন। এদিন বিকেলে যখন চন্দনা বিশ্বাস বাথরুমে গিয়েছিলেন সেই সুযোগে সুজন কান্তি বিশ্বাস গলায় দড়ি দেন। তিনি ফিরে এসে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন কিন্তু তাকে নামানোর জন্য চিৎকার চেচামেচি করলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। অবশ্যই এর পেছনে কারণ ছিল করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক।

তবে এলাকাবাসীরা আরেকটা প্রশ্ন তুলছেন, একজন ৭০ বছর বয়স্ক ব্যক্তিকে একটা ছোট রুমে কেন হোম আইসোলেশনে থাকার অনুমতি দিল জেলা প্রশাসন? তারা বলেন, “যে রুমে দুই বয়স্ক ব্যক্তি থাকেন, সেটা তুলনামূলকভাবে অত্যন্ত ছোট। এছাড়া তাদের বাড়িতে কোনও যুবক ব্যক্তি নেই। এমন অবস্থায় হোম আইসোলেশনে রাখা কতটুকু যুক্তিযুক্ত ছিল, আমরা বুঝে উঠতে পারছিনা। তবে যাই হোক এবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর মৃতদেহ সৎকার করার পাশাপাশি যাতে এলাকা সেনিটাইজ করা হয় এটাই আমরা চাই।

Comments are closed.

error: Content is protected !!