নাগরিকত্ব বিল ও অসম চুক্তি পরস্পর বিরোধী, প্রকাশ্যে লোক ঠকালেন মোদি, অভিযোগ কংগ্রেসের
একই সঙ্গে নাগরিকত্ব বিল আনবেন এবং অসম চুক্তির ৬-নম্বর ধারাও বাস্তবায়ন হবে বলে রীতিমত লোক ঠকিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এমনটাই অভিযোগ জেলা কংগ্রেসের। শনিবার তারা এক সাংবাদিক সম্মেলন করে নরেন্দ্র মোদীর কথাগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার রামনগর এসে একইসঙ্গে নাগরিকত্ব বিল আনবেন এবং আসাম অ্যাকর্ডের ৬-নম্বর ধারাকেও বাস্তবায়ন করবেন বলে কথা দিলেন এবং লোকের বাহবা কোড়ালেন। তার সভায় সব কথায় কারা চিৎকার দিল সেটা বলে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। তবে আসাম অ্যাকর্ডের ৬-নম্বর ধারা এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ যে একে অপরের পরিপন্থী তা বোঝা খুবই সহজ। আসাম অ্যাকর্ডের ৬-নম্বর ধারা অনুযায়ী অসমে নাগরিকত্ব পাওয়ার কাট-অফ তারিখ হচ্ছে ২১ মার্চ ১৯৭১, আর নাগরিকত্ব বিল বলছে তারিখটি হবে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪। তবে একই সঙ্গে দুটি কি করে বাস্তব হতে পারে তা মোদীজি বা তার দলের লোকেরা একটু পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিলে ভাল হয় বলে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়। আর সেটা না পারলে বলা যেতে পারে, নরেন্দ্র মোদী লোক ঠকানো রাজনীতি করে গেছেন। তিনি সাধারণ বাঙালিদের ভাওতা দিয়ে বাহবা কুড়িয়েছেন এবং ভাড়া করে আনা সমর্থকরা তাতে চিৎকার করেছে,দলের পক্ষ থেকে যোগ করা হয়।
দলের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, কোটি কোটি সরকারি টাকা খরচ করে প্রধানমন্ত্রীর রেলি আয়োজন করা হলো। অথচ বরাকে এসে বরাকের বাঙালিদের বিরুদ্ধে কথা বলে গেলেন মোদী। আর সমর্থকরা বুঝতেই পারলনা।
নরেন্দ্র মোদি বরাককে কিছুই দিলেননা এবং এড়িয়ে গেলেন তার ২০১৪ সালের দেওয়া কথাগুলোও। গতবার প্রচারে এসে জোর গলায় বলেছিলেন, ”ডিটেনশন ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেব’। অথচ আজ নতুন করে ডিটেনশন ক্যাম্প বানানোর জন্য জায়গা কেনা হচ্ছে। নিরীহ মানুষদের ডি-ভোটারের নাম করে জেলে পুড়ে দেওয়া হচ্ছে। সে বিষয়ে একটি কথা বললেন না, উল্টো মহাসড়ক নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন। সাড়ে চার বছরে চাইলে মহাসড়কে এটুকু কাজ তারা করতে পারতেন, তবে নির্বাচনের আগে এসে এসব কথা বলার মানেই হচ্ছে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি।
দল আরও উল্লেখ করল, পাশাপাশি কাগজকল পুনরুজ্জীবন বা বরাকের চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির মত প্রয়োজনীয় ব্যাপারগুলো উঠে এলোনা প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের কথা বললেন, কিন্তু বরাক উপত্যকায় কোন প্রকল্প চালু হবে এটা বললেন না। একজন প্রধানমন্ত্রী কোনও এলাকায় গিয়ে এতটা নিরাশ কখনো করেননি যা মোদী করে গেলেন। তবে তার কাছ থেকে এর থেকে বেশি কি আর আশা করা যায়!
নাগরিকত্ব বিষয়ে মোদী বিশেষ কোন পড়াশোনা করেননি বা লোক ঠকানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে গেছেন বলে উল্লেখ করে দলের পক্ষে বলা হয় বিজেপি রাজত্বে বাঙালির ভবিষ্যতে অন্ধকারের দিন ঘনিয়ে আসছে।
Comments are closed.