হিন্দু বাঙালিদের ঠকানোর যোগ্য জবাব পাবেন সুস্মিতা, হুঁশিয়ারি আভার
সারা আসাম বাঙালি হিন্দু অ্যাসোসিয়েশন (আভা) আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করানোর জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানায়। সংস্থার সভাপতি বাসুদেব শর্মা সাংবাদিকদের জানান,
‘কবীন্দ্র পুরকায়স্থ শিলচরের সাংসদ থাকাকালীন ২০১২-১৩ সালে সংসদে নাগরিকত্ব বিলের ব্যাপারে প্রথমবার কথা বলেছিলেন। আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী বরাকে নিজে এসে বিলটি ঘোষণা করে গেলেন এবং লোকসভায় পাস করিয়ে রাজ্যসভায়ও পেশ হয়ে গেল। এতদিনের স্বপ্ন আজ বাস্তব রূপ নিয়েছে। তার জন্য কবীন্দ্র পুরকায়স্থ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, সবাই ধন্যবাদের দাবি রাখেন। তবে যারা এই বিলটির বিরোধিতা করছে তাদের আমরা ধিক্কার জানাই।’
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় পাস হওয়াকে আমরা হিন্দু বাঙালি জনগণের জয় বলে মনে করি। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, এই বিল দেশভাগের প্রায়শ্চিত্য হিসাবে আনা হচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে আমাদের মাতৃভূমিকে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল কংগ্রেসের মতো দল। তারপর হিন্দুরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে। আত্মরক্ষার জন্য তারা ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, এতে কোনো ভুল করেননি, ভারতবর্ষ তাদেরও নিজের দেশ। তবে এত বছর ধরে এই সমস্যাকে জাগিয়ে রেখে রাজনীতি করে যাওয়া হয়েছে। এবার নরেন্দ্র মোদির মতো একজন প্রধানমন্ত্রী সাহস দেখিয়েছেন নির্যাতিত হিন্দুদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার। ২০১২-১৩ সালে তৎকালীন সাংসদ কবীন্দ্র পুরকায়স্থ সংসদে এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন, তখন কংগ্রেসের সরকার ছিল। তাই তার কথা কেউ শোনেনি। তবে তিনি যে আওয়াজ তুলেছিলেন সেটা বিফল হয়নি, নরেন্দ্র মোদি সরকারে আসার পর কবীন্দ্র পুরকায়স্থ সাংসদ না থাকলেও তার সম্মান ছিল দলে, তারই প্রমাণ এই বিল বলে তারা উল্লেখ করেন।
সংস্থার প্রতিনিধি বলেন, “যারা এই বিলের সমর্থন করেছেন আমরা তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে কিছু লোক নির্লজ্জভাবে বিলটির বিরোধিতা করছেন। তার মধ্যে রয়েছেন স্বয়ং শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব। তাকে আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, হিন্দু বাঙালিদের বিরুদ্ধে আপনি যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তার জন্য জনগণ আপনাকে ক্ষমা করবেনা। আপনি নিছক রাজনীতির জন্য নিজের মানুষের বিরোধিতা করছেন, এটা লজ্জার। তবে আপনি আমাদের বারবার লজ্জিতই করেন। অতীতে পুরুষের ঘাড়ে চড়ে যেভাবে আপনি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাতে আমাদের মাথা হেঁট হয়ে গেছিল। এবার বিলের বিরোধিতা করে সংসদ থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমরা ভোটের বাক্সে এর জবাব দেবো এবং বরাকের প্রত্যেক বাঙালি হিন্দু একই জবাব দেবে আপনাকে, তৈরি থাকুন!”
এখানে উল্লেখ্য, সংসদে এই বিল পাস হওয়া নিয়ে মঙ্গল এবং বুধবার আসাম তথা উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন অংশে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। দু একটা ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া বরাক উপত্যকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।
Comments are closed.