সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পসে স্বর্ণালী সহ ক্ষুদে শিল্পীদের 'গ্রুমিং' করছেন শিলচরের রণদীপ
শিলচরের মেয়ে স্বর্ণালী জিটিভিতে অনুষ্ঠিত গানের রিয়েলিটি শো সারেগামাপা’র শীর্ষ পনেরোর তালিকায় স্থান করে নেওয়ায় বরাকবাসী মাত্রেই অত্যন্ত খুশি। সেই খুশিতে অবশ্যই নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে আরও একটি খবরে। সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে পর্দার পেছনে স্বর্ণালী সহ ক্ষুদে শিল্পীদের যিনি সাহায্য করছেন তিনিও শিলচরেরই একজন। রণদীপ ভাস্কর। পূর্বে শিলচরের বিবেকানন্দ রোডের এবং বর্তমানে মুম্বাইয়ের বাসিন্দা।
শিলচরের ভাস্কর চৌধুরীর ছেলে রণদীপ স্বর্ণালী সহ সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পসের সব প্রতিযোগীদের গ্রুমিং সেশনে নানা ভাবে সাহায্য করছেন। উল্লেখ্য, স্টুডিও রাউন্ডে যাওয়ার আগে বাচ্চাদের একমাস সময় ধরে গ্রুমিং সেশন হয়। এই গ্রুমিং সেশনে বাচ্চাদের সংগীতের পরিবেশে নিয়ে এসে গানের সূক্ষ্ম বিষয়গুলো থেকে শুরু করে বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয় তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।সকালের রেওয়াজ থেকে শুরু করে কিভাবে নিজেকে আরও ভাল ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন ক্ষুদে শিল্পীরা, এরই আনুষ্ঠানিকভাবে দেখাশোনা করছেন রণদীপ। তাছাড়া ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান থেকে অডিশনের মাধ্যমে শিল্পীদের নির্বাচন করে নিয়ে আসার দায়িত্ব ছিল মুম্বাইয়ের আনন্দ্ শর্মার দলের অন্যান্যদের সঙ্গে রণদীপেরও। এমনকি প্রতিযোগিতার মূল পর্বে সেলিব্রেটিদের সামনে যাওয়ার আগে যে চূড়ান্ত নির্বাচন হয়, সেটাতেও রণদীপের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
শুধু এই রিয়েলিটি শো-ই নয়, এর আগেও বিগত পাঁচ বছর ধরে তিনি অন্যান্য রিয়েলিটি শো যেমন ইন্ডিয়ান আইডল, ভয়েস, দিল হে হিন্দুস্তানি ইত্যাদিতে পুরো ভারতবর্ষ থেকে অডিশনের মাধ্যমে বাছাই করে শিল্পীদের রিয়েলিটি সো’র মূল পর্বে নিয়ে আসার কাজ করছেন। বিগত টানা চার বছর ধরে ইন্ডিয়ান আইডেলে সিলেকশন টিমে তিনি রয়েছেন।
৩৮ বছর বয়সী রণদীপ মুম্বাইয়ে ২০০৯ সালে সারেগামাপা মেগা চ্যালেঞ্জ বিজেতা অভিজিত ঘোষাল, ভয়েস অফ ইন্ডিয়ার রাহুল মুখার্জি, রবি শুক্লা, ইন্ডিয়ান আইডলের অমিত সানা, অভিনেত্রী দীপ্তি নাভাল সহ অনেকেরই সঙ্গীত শিক্ষক। যদিও বিশেষ ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বরাক উপত্যকার শিল্পীদের এখনও তেমন করে সাহায্য করতে পারেননি রণদীপ। বরাক উপত্যকায় একটি ওয়ার্কশপ করার ইচ্ছের কথা জানালেন তিনি। এই উপত্যকায় অনেক প্রতিভাশালী শিল্পীরা রয়েছেন যারা গাইডেন্স পেলে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারেন। এখন অবধি তাদের কোনভাবে সাহায্য করতে না পারলেও ভবিষ্যতে উপত্যকার শিল্পীদের সাহায্য করার প্রবল ইচ্ছে রয়েছে বলে জানালেন রণদীপ।এমনকি সুযোগ পেলে অবশ্যই উপত্যকার শিল্পীদের নিয়ে কাজ করারও ইচ্ছে রয়েছে তার।
ছোট বেলায় গানের হাতেখড়ি হয়েছিল শিলচরের পন্ডিত মতিলাল সিনহার কাছে। তাছাড়াও সংগীতের প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেছেন শিলচরের দীপক ভট্টাচার্য্য ও অমরেন্দ্র চক্রবর্তীর কাছ থেকেও। পরে কলকাতার প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার কাছে দীর্ঘদিন সংগীতের শিক্ষা লাভ করেন। রবীন্দ্রভারতীতে সঙ্গীত নিয়ে পড়াশোনা করার পর মুম্বাইয়ে পন্ডিত আফরিন শর্মা ও পন্ডিত গৌতম মুখার্জির কাছেও সংগীত শিক্ষা লাভ করেন। বিশেষভাবে শিলচরের ছেলে বলে হয়ত সিলেটি লোকসংগীতের প্রতি এক টান রয়েছে। ‘অন্তর মন’ নামের তার ব্যান্ডের দুটো ভিডিও অ্যালবামের একটিতে সিলেটি লোকসংগীত গেয়েছেন রণদীপ।
২০১৭ সালে মিরচি মিউজিক পুরস্কার প্রাপ্ত রণদীপ শিলচরের ক্ষুদে শিল্পী স্বর্ণালীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পসে স্বর্ণালী অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে বলে তিনি মনে করেন।
Comments are closed.