সিপাহী বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত মালেগড় টিলা হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্র, বরাদ্দ ৫০ লক্ষ
সিপাহী বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত করিমগঞ্জ জেলার লাতু মালেগড় টিলার আকর্ষণ বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হলো সরকার। অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ঘোষিত এবারের রাজ্য বাজেটে এই উদ্দেশ্যে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গতকাল বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান পরিষদীয় মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী। প্রশ্নটি উত্থাপন করেছিলেন করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ।
সিপাহী বিদ্রোহের সময় মালেগড়ে কি ঘটেছিল, এসংক্রান্ত সম্পূর্ণ ইতিহাস সরকারের কাছে আছে কিনা, এই সম্পর্কে জানতে চান বিধায়ক কমলাক্ষ। প্রত্যুত্তরে মন্ত্রী জানান, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত মালেগড় স্থানটি। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় ইংরেজের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় ২০০ জন সৈনিক যুদ্ধ করেছিলেন। ইতিহাস থেকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রী পাটোয়ারী বলেন, চট্টগ্রামের নেটিভ ইনফেন্ট্রি কোম্পানির ২০০ জন সৈনিক ব্রিটিশের জেলা আধিকারিকের কার্যালয় আক্রমণ করার পাশাপাশি কারাগার ভেঙে কয়েদিদের মুক্তি দেন। সেই সঙ্গে কোষাগার থেকে টাকা লুঠ করে লাতু হয়ে মনিপুরের অভিমুখে রওনা হন।
এই খবর পেয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সিলেট লাইট ইনফ্যান্ট্রি কমান্ড্যান্ট মেজর বিং এর নেতৃত্বে ১৬০ জন সৈনিক এলাকার দিকে এগিয়ে যান। ফলত মালেগড়ে দুই পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । এতে নেটিভ ইনফিনিটির ২৬জন এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মেজর বিংসহ ৫ জন সৈনিক মারা যান। মৃত ২৬ জন সৈনিকের মৃতদেহ সমাধিস্থ করা হয় এই মালেগড়ে।
তাই, শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই স্থানটির সংরক্ষণ এবং উন্নয়নে জেলা প্রশাসন এবং পর্যটন বিভাগ এই মালেগড় টিলার উন্নয়নে কাজ করছে। ফলে, ওই স্থানে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কোন কোন কাজের প্রকল্প নেই।
পর্যটন বিভাগের মন্ত্রী নবকুমার দোলে জানিয়েছেন, করিমগঞ্জের মালেগড় টিলাকে এখনো অসমের প্রাচীন এবং তথ্য অধিনিয়ম, ১৯৫৯ এবং আসামের প্রাচীন এবং তথ্য বিধি, ১৯৬৪’র অধীনে বর্তমান ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে পরে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Comments are closed.