Also read in

আজ রামকৃষ্ণ মিশনে যাত্রাপালা নরোত্তম কর্ণ, স্বেচ্ছাসেবকদের একনিষ্ঠ প্রয়াস

প্রতিটি কাজ তারা নিষ্ঠা এবং ভালোবাসার সাথে করেন। সাত বছর বয়সের শিশু থেকে থেকে সত্তর-আশি বছরের তরুণরা ( হ্যাঁ, এরা এখনও মনেপ্রাণে তরুণ) – কেউ ছাত্র, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ শিক্ষক, এরা সবাই শিলচর রামকৃষ্ণ মিশণের স্বেচ্ছাসেবক।

জুতো রাখা থেকে চন্ডীপাঠ সব কিছুতেই ওদের সমান নিষ্ঠা। শুধু নিয়মনিষ্ঠ ভাবে ধর্ম চর্চা বা সমাজ সেবা নয়, এদের মধ্যে এক অজানা শিল্পীও বাস করে। গত ৮ বছর থেকে বেশ কিছু প্রযোজনা তারা মঞ্চস্থ করেছেন।
আজও আবার স্বামী বিবিক্তানন্দ রচিত এবং প্রদীপ দাস ও বিশ্বজীত নাথ সমাজপতি নির্দেশিত “নরোত্তম কর্ণ” যাত্রাপালা সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় শিলচর রামকৃষ্ণ মিশণে মঞ্চস্থ করবেন মিশনের স্বেচ্ছা সেবকরা।
শ্রী রামকৃষ্ণের কথায়, “একোয়া, ওয়াটার, পানি, বারি নাম দেয় জলে। আল্লা, গড, ইশামুসা, কালী নাম ভেদে বলে”।
স্বামীজী বলতেন “মানুষে ইশ্বর হউক মানুষ শেষ কথা । শিব জ্ঞানে জীব সেবা না হয় অন্যথা।”

শ্রী শ্রী মায়ের কথায়—“আমি নরেনেরও মা আমজাদেরও মা। ”

সকল সংস্কৃতি প্রেমী ও নাট্যমোদী জনসাধারণের কাছে উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ, আসুন আজ সন্ধ্যায় শিলচর রামকৃষ্ণ মিশনে একবার স্বেচ্ছাসেবকদের ভালোবাসার প্রযোজনা দেখে যান, নিরাশ হবেন না।

কুন্তীর জ্যেষ্ঠ পুত্র হওয়া সত্ত্বেও কর্ণ তাঁর অন্যান্য ভাইদের বিপরীত কোটিতে অবস্থান করেছিলেন বলে তাঁর স্বভাব-চরিত্র সংস্কার এবং ভাবনা এতটাই অন্যরকম যে,তাঁকে অন্য তিন কুন্তীপুত্রের অগ্রভাগে আমরা তাঁকে দেখিনি। অথচ কর্ণের মধ্যে সেই সম্ভবনা ছিল। তিনি প্রথম কৌন্তেয় হতে পারতেন, তিনি পাঁচ পাণ্ডব-ভাইয়ের জ্যেষ্ঠতম হতে পারতেন, সবচেয়ে বড় কথা, তিনি দ্রৌপদীর প্রথমতম স্বামীও হতে পারতেন। সর্বস্তরে এই ” হতে-পারতেন “মানুষটা যেহেতু কখনই যা হবার ছিল তা হননি,তাই তাঁকে সবার শেষে বীরোচিত একাকিত্বের মর্যাদায় রাখা হয়েছে। অথচ কর্ণ বড় বেশি কৌন্তেয়। কুন্তী মনে মনে তাঁকে চিরকাল কৌন্তেয় বলেই মনে করেছেন কর্ণও সারা জীবন ধরে সেই নেতি নেতি জননীর জন্য হা-হুতাশ করে নেতিবাচক ভাবেই কৌন্তেয়।অতি শৈশবে জননীর দ্বারা পরিত্যক্ত হয়ে নিঃসীম হতাশার মধ্যে জীবন কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত কর্ণ যেভাবে মৃত্যু-বরণ করেছেন, তাতে এই অসাধারণ বীরের জন্য সকলের হৃদয়ে গভীর সমবেদনা আছে।কর্ণের এই জীবন-রহস্য জানার জন্য আসুন রবিবার ১০ মার্চ সন্ধ্যা ৬-৩০ মিনিটে শিলচর রামকৃষ্ণ মিশনে।

এই যাত্রাপালার নির্দেশনা এবং সহ নির্দেশনায় রয়েছেন বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব প্রদীপ দাস ও বিশ্বজিৎ সমাজপতি। উপদেষ্টা হিসেবে আছেন মিশনের মহারাজরা।

অভিনয়ে রয়েছেন,
কর্ণ: বিশ্বজিৎ সমাজপতি,
অর্জুন: সায়ন চক্রবর্তী, দ্রোণাচার্য: অসিত চক্রবর্তী, যুধিষ্ঠির: দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায়, দূর্যোধন: সন্তোষ দে, ভীম: সৌমপ্রকাশ ভট্টাচার্য, নকুল: দেবজ্যোতি রায়, সহদেব: শুভাশিস চৌধুরি, শ্রীকৃষ্ণ: প্রদীপ দাস, বিবেক: অনিমেষ দেব।

অন্যান্য ভূমিকায় আছেন প্রদীপ চক্রবর্তী, অভিষেক ভট্টাচার্য, শুভদীপ গুপ্ত, কুন্তল রায় চৌধুরী, প্রবীর দাস, উদ্দীপন চন্দ, দ্রৈহিত বনিক, অরুনাভ দত্ত বণিক, অনিকেত চক্রবর্তী, দীপক চক্রবর্তী, অমিত বণিক, প্রতিক দাস, সুপান্থ দাস, সুরদীপ বনিক প্রমূখ।

এই পরিবেশনাটি সামগ্রিকভাবে রামকৃষ্ণ মিশন শিলচরের স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দের একনিষ্ঠ প্রয়াস।

Comments are closed.