উৎকৃষ্ট কোচ এবার শিলচর-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসে চালু হল
১৫৬১১ -১৫৬১২ শিলচর গুয়াহাটি এক্সপ্রেসে জুড়ে দেওয়া হল ‘প্রজেক্ট উৎকৃষ্ট’য়ের কোচ। শিলচর গুয়াহাটি উৎকৃষ্ট কোচযুক্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা রবিবার শুরু হলো। কামরার রং বদল থেকে শুরু করে লাইট ফ্যান টয়লেট সব আধুনিক করে তোলা হয়েছে এই কোচগুলোতে।
পুরনো দিনের সেই আইসিএফ কোচ সরিয়ে সুদৃশ্য আরামদায়ক উৎকৃষ্ট কোচ যোগ করা হয়েছে ট্রেনটিতে। এখন এই আরামদায়ক কোচগুলোতে ভ্রমণে সাথে সাথে বড়াইল পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করায়ও আরো সহায়ক হবে, এটা বলাই বাহুল্য। এই ট্র্যাকে চলা অন্যান্য ট্রেনগুলোতেও আগের সব পুরনো কোচ বদল করে ভারতীয় রেল প্রজেক্ট উৎকৃষ্ট কোচ দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের দশটি ট্রেনকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
রেলমন্ত্রকের সূত্র অনুযায়ী, ট্রেনের রেক, শৌচালয়, এসি কোচ, নন-এসি স্লিপার কোচ, অসংরক্ষিত কামরা এবং প্যান্ট্রি কারের সর্বত্রই খোলনলচে বদলে ফেলা হয়েছে। সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়া ব্যবস্থায় অনেক বেশি যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেমন বাতানুকূল শ্রেণীতে ‘ডিমার’ সহযোগে রিডিং ল্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ বই বা কাগজ পড়তে পড়তে প্রয়োজনে রিডিং ল্যাম্পের আলো কমাতে-বাড়াতে পারবেন সাধারণ যাত্রীরা। থাকছে ‘টেম্পারেচার ইন্ডিকেটর’ও। অনেক সময়ই এসি কামরায় খুব গরম বা ঠান্ডা লাগার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। কিন্তু কোচের ভিতরের তাপমাত্রা কত রয়েছে, তা তাঁরা নিজেদের আসনে বসে দেখতে পারেন না। ‘উৎকৃষ্ট’ কোচে সেই বন্দোবস্তও করছে রেল। পাশাপাশি ট্রেনের শৌচালয়ে কেউ আছেন কি না, তা জানার জন্য দরজায় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজনও আর পড়বে না। শৌচালয়ের দরজার উপরেই থাকবে ‘টয়লেট অকুপেন্সি’ চিহ্ন।
নন-এসি কামরায় যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ব্যবস্থা করা হয়েছে ‘অ্যান্টি-স্কিড ফ্লোর’-এর। অর্থাৎ বেখেয়ালে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকবে না। পর্যাপ্ত ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বার্থে চড়ার জন্য নতুন মইয়ের (ল্যাডার) বন্দোবস্ত হয়েছে। এরই পাশাপাশি থাকবে ‘ডেস্টিনেশন বোর্ড’। ট্রেনটি কোন স্টেশন ছাড়িয়েছে, পরবর্তী কোন স্টেশন আসছে এবং ট্রেনটি কতদূর পর্যন্ত যাবে, তার সবই উঠবে সংশ্লিষ্ট ডেস্টিনেশন বোর্ডে। প্যান্ট্রি কার মুড়ে দেওয়া হচ্ছে নতুন স্টেনলেস স্টিল দিয়ে। খাবার তৈরির ক্ষেত্রেও ব্যবহার হবে নয়া স্টেনলেস স্টিলের সরঞ্জামের। সবুজায়নের লক্ষ্যে ‘গ্রিন রেক’ তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে শৌচালয়ে। রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘স্বচ্ছতা রেল টয়লেট’ (এসআরটি) নামের এইসব শৌচালয়ে জলের ব্যবহার কমানো হবে অনেকটাই। নতুন ব্যবস্থায় একবার ফ্লাশ করলে জল খরচ হবে লিটার দু’য়েক। এমনকী শৌচালয়ে জল যাতে কোনওসময় জমে না যায়, তারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, উৎকৃষ্ট কোচে কখনওই শৌচালয়ে দুর্গন্ধের অভিযোগ করতে পারবেন না সাধারণ যাত্রীরা। প্রত্যেক শৌচালয়ে একটি করে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হবে। রেল জানিয়েছে, এক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে কোচের মধ্যে এলইডি টিউব লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি শৌচালয়ের মধ্যে, দরজার সামনে প্যানেল এলইডি আলো ব্যবহার করা হবে।
এখানে উল্লেখ্য, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ইংরেজি তারিখে তিরুবনন্তপুরম-হজরত নিজামুদ্দিন এক্সপ্রেসে প্রথম এই কোচ যুক্ত করা হয়েছিল।
Comments are closed.