
চাকরি নিয়মিতকরণের দাবিতে টেট শিক্ষকদের ধর্নায় উত্তাল অফিসপাড়া
কাছাড়ের জেলা উপায়ুক্তের কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার টেট্ শিক্ষকরা ধর্ণায় বসেন। চাকরির নিয়মিতকরণের দাবিতে শত শত টেট্ শিক্ষকরা এই ধর্ণা কর্মসূচি পালন করেন। শুধু শিলচরেই নয়, আসামের প্রতিটি জেলা উপায়ুক্তের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষকরা এদিন ধর্ণা কর্মসূচি পালন করেছেন। এলিমেন্টারি টেট্ কোয়ালিফাইড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন, আসামের কাছাড় জেলা কমিটি এবং সারা আসাম প্রাথমিক টেট্ উত্তীর্ণ শিক্ষক সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে এই ধর্ণার আয়োজন করা হয়।
আসামে এসএসএ এবং স্টেটপুল সহ বিনাশর্তে রাজ্যের অস্থায়ী টেট্ শিক্ষকদের অবিলম্বে নিয়মিত করার দাবি জানান শিক্ষকরা। অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, অস্থায়ী স্নাতক শিক্ষকদের গ্রেড স্কেল দিতে হবে এবং ২০১২’র ঠিকাভিত্তিক টেট্ শিক্ষকদের টেট্ সার্টিফিকেটের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে হবে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে ২০১২ সালের টেট্ উত্তীর্ণদের সাত বছরের মেয়াদ ২০১৯ সালে শেষ হতে চলেছে।
এদিকে অ্যাসোসিয়েশনের জেলা কমিটির পক্ষ থেকে আসামের শিক্ষা মন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যের মন্তব্যের তীব্র ভাবে ধিক্কার জানানো হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, আসামের শিক্ষা মন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য সম্প্রতি রেডিও লাইভে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় টেট শিক্ষকদের ড্রাইভার এবং তাদের টেট্ সার্টিফিকেটকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, টেট শিক্ষকদেরও ড্রাইভারদের মত ড্রাইভিং লাইসেন্স রিনিউ করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যে সমাজের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত শিক্ষক সমাজ অপমান বোধ করেছেন। এই অপমান বোধের বহিঃপ্রকাশে অনেক টেট্ শিক্ষকরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ফেসবুক প্রোফাইলে নিজেদের নামের আগে ‘ড্রাইভার’ শব্দ জুড়ে দেন।
এদিকে আসামে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষা বিভাগ থেকে আবার টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষায় আবার সব ঠিকাভিত্তিক শিক্ষকদের বসতে হবে। আর পুনরায় টেট পরীক্ষা না দিলে ঠিকাভিত্তিক শিক্ষকগণ নিয়মিত পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কারণ সর্ব শিক্ষার অধীনে টেটের সার্টিফিকেটের সাত বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে এ বছরই। এই অবস্থায় আসামে প্রায় ৪১ হাজার অস্থায়ী শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এই শিক্ষকরা।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে দশ দিনের সময় দিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়। কিন্তু এর পরও যদি এ ব্যাপারে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে পা বাড়াবেন বলে উল্লেখ করেন। এরই অঙ্গ হিসেবে আগামী ২৯ জুন দিশপুরে ধর্ণা কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানানো হয়।
Comments are closed.