
চাঁদা তুলে শহরের জঞ্জাল সাফাই করছেন বদরপুরের সাধারণ মানুষ
কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। কথাটা প্রমাণ করলেন বদরপুরের সাধারণ মানুষ। সরকারি সাহায্য ছাড়াও যে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ গোছানো সম্ভব হয় তারই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বুন্দাশিল, দিখিরপাড়, খাদিমান গ্রামের মানুষ। বদরপুর শহরের লাগোয়া এই তিন গ্রামের গ্রামবাসীরা সরকারের সাহায্যের পরোয়া না করে চাঁদা সংগ্রহ করে ওই গ্রামগুলোর উন্নয়নে ব্রতী হন।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, এই গ্রামের মানুষ বেশ কয়েক বছর ধরে জমা জলের সমস্যায় ভুগছেন। গ্রামের প্রতিটি নালা আবর্জনায় ভরে গেছে। মিশন রোড থেকে বাজার মসজিদ পর্যন্ত নালা পরিষ্কার না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই মিনি বন্যার সৃষ্টি হয়ে যায় বেশ কিছু জায়গায়। ফলে এই অঞ্চলের জনগণের দুর্দশার শেষ নেই। এই অবস্থায় এই নালাগুলো সংস্কারের জন্য বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী এবার সরকারের ওপর ভরসা না করে চাঁদা সংগ্রহ করে নালা পরিষ্কারের কাজে ব্রতী হয়েছেন। জানা গেছে, ইতিমধ্যেই ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হতে আরো এক সপ্তাহ লাগবে বলে গ্রামবাসীরা জানান। গ্রামবাসীরা আরো জানান যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে চাঁদা তুলে নালা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরো জানা যায় যে এর আগেও মাঝে মধ্যেই স্থানীয় জনগণ চাঁদা তুলে মিশন রোড থেকে বাজার মসজিদ পর্যন্ত নালা পরিষ্কার করেছেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই শহরের আবর্জনায় আবার নালাগুলো ভরে যায়। জানা যায়,অতীতে এই নালা দিয়ে নৌকা চলাচল করত। বর্তমানে নালাটিতে অবৈধ দখলকারী ও অবৈধ ফুটপাত দখলকারী ব্যবসায়ীদের পরিত্যক্ত স্তূপীকৃত আবর্জনায় নালা দিয়ে জল নিষ্কাশন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে নালায় আগের মত জলের আর কোনও স্রোত নেই। গ্রামবাসীদের মতে, বুন্দাশিল জিপির সদস্যরা এবং বদরপুর টাউন কমিটি চাইলেই এই নালাটির ভালোভাবে সংস্কার করা সম্ভব ছিল। কিন্তু তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। ফলে স্কুল কলেজের পড়ুয়া সহ সাধারণ মানুষকে প্রচন্ডভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই অবস্থায় এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে এবার চাঁদা সংগ্রহ করে নর্দমা পরিস্কারের কাজ শুরু করেন। তাদের এই উদ্যোগ সফল হবে এবং এলাকাবাসীর দুর্দশার শেষ হবে বলে আশা করা যায়।
Comments are closed.