মধ্যপ্রাচ্যের শেখদের রসনা তৃপ্ত করতে কাছাড়ের সুস্বাদু আনারস পাড়ি দিচ্ছে দুবাই , উৎসাহিত চাষিরা
কাছাড় জেলার লক্ষীপুর মহকুমার মারকুলিন থেকে আনারস যাচ্ছে এবার দুবাই, খুলছে নতুন দিগন্ত। ১০০০০ আনারস নিয়ে একটি কন্টেইনার মুম্বাই হয়ে জাহাজে দুবাই পাড়ি দিতে মারকুলিন থেকে রওনা দিল রোববার । এই নতুন উদ্যোগের প্রথম কন্সাইনমেন্টে শুভেচ্ছা জানাতে রোববার মারকুলিনে হাজির ছিলেন স্বামী-পুত্র নিয়ে জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরী। আনারস বাগান ঘুরে দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন তারাও।
লক্ষ্মীপুরের আনারসের প্রসিদ্ধি ভারত জুড়ে, হিল্লি দিল্লি থেকে আত্মীয়-স্বজন এলে অনেক ঝক্কি পুইয়ে বিমানে নিয়ে যান এই আনারস, তবে তা নাম মাত্র। এই আনারস এতদিন বরাক উপত্যকা এবং আশেপাশের জনসাধারণের রসনা তৃপ্ত করে আসছিল। এবার এর স্বাদ পেতে চলেছেন দুবাই বাসীরাও। বিভিন্ন বাগান থেকে এই সুস্বাদু ১০০০০ আনারস সংগ্রহ করা হয়েছে, তারপর প্যাকেটজাত করা হয়েছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। উঠানো হয়েছে বাতানুকূল কন্টেইনারে, লক্ষ্য দুবাই। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী রইলেন জেলাশাসক লায়া মাদ্দূরী এবং জেলা কৃষি আধিকারিক জাকির হুসেন চৌধুরী। জাকির হোসেন চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন, “যদি এই প্রথম কন্সাইনমেন্টটা ওদের পছন্দ হয়, তাহলে আরো বরাত আসবে। তখন অন্যান্য এক্সপোর্ট কোম্পানি গুলোও এগিয়ে আসবে। আমি আশা রাখি আনারস চাষীদের দুঃখের দিন চলে যাবে, এরা উপযুক্ত দাম পাবেন”। ভবিষ্যতে আনারস বাণিজ্যের দ্বার প্রশস্ত হবে, এমনটাই আশা করছেন কৃষি বিভাগ ও। মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবের শেখরা যদি লক্ষীপুরের আনারসের স্বাদ একবার পেয়ে যান, তাহলে বিশ্বের অন্য কোন আনারস পাত্তা পাবে না বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুর, বিন্নাকান্দি, রাজাবাজার এলাকা মিলিয়ে প্রায় পনেরোশো হেক্টর জমিতে প্রতি বৎসর প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন আনারস উৎপাদন হয়। কিন্তু সেই তুলনায় যথোচিত মূল্য পান না চাষিরা, ঘটেনা তাদের জীবনে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। এবার ঘুরতে পারে তাদের ভাগ্যের চাকা।
এই সংবাদে শিলচরের এক গৃহিণী শোভনা জানালেন, “আমাদের বরাকে উৎপাদিত সুস্বাদু এই একটা ফল সস্তায় পাচ্ছিলাম, সেটা বোধহয় আর ভবিষ্যতে সম্ভব হবে না । যাই হোক, কাছাড়ের আনারস যদি বিশ্ববিজয় করে এবং গরিব চাষিদের যদি কপাল ফেরে তাও ভালো।”
Comments are closed.