Also read in

মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন সাংবাদিক মলিন শর্মা

এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন সাংবাদিক মলিন শর্মা। ঘটনাটি ঘটে তারাপুর ফায়ার ব্রিগেড স্টেশনের সামনে রবিবার রাত ১১টা নাগাদ, ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাতে ট্রাংক রোডে রোটারী ক্লাবের ভবনে আয়োজিত ইনার হুইল ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে সংবাদ সংগ্রহের পর স্কুটিতে চড়ে মলিন তার তারাপুর ইএনডি কলোনী সংলগ্ন এলাকার বাড়িতে ফিরছিলেন তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের বয়ান অনুযায়ী টিপার-জাতীয় কোনও এক গাড়ি তার স্কুটারে ধাক্কা মারে এবং তাকে পিষ্ট করে চলে যায়।

শহরের ট্রাফিক ইনচার্জ সান্তনু দাসের মতে রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে কি গাড়ি সাংবাদিক মলিন শর্মাকে ধাক্কা মেরেছে এবং একজন মানুষকে মেরে শহর থেকে কিভাবে নিরাপদে পালিয়ে গেছে, এব্যাপারে কিছুই জানেন না তারা। অগ্নি ও আপৎকালীন সেবা কেন্দ্র কার্যালয়ের বিপরীতে থাকা ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বিল্ডিংয়ে সিসিটিভি রয়েছে সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে, এতটুকুই জানা গেছে পুলিশের কাছ থেকে।

সংবাদমাধ্যম বিটিএন চ্যানেলে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত মলিন শর্মা। বরাক উপত্যকার অন্যতম বরিষ্ঠ সাংবাদিক ছিলেন। তার মৃত্যুতে প্রত্যেকে শোকগ্রস্ত এবং মানসিক ভাবে আহত। এভাবে রাতের বেলা শহরে লাইসেন্স ছাড়া গাড়িগুলো ঢুকে সাধারণ মানুষকে মেরে চলে যাবে এবং প্রশাসন জানতেও পারবেনা কি গাড়ী ছিলো, কি তার নাম্বার, এমন একটা শহরে বাস করছি আমরা। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার ফলাও করে প্রচার হলেও শিলচর শহরের কোনও ট্রাফিক পয়েন্টে একটা সিসিটিভি পর্যন্ত নেই। যদি থাকতো তাহলে পুলিশ এত অসহায়ের মতো ব্যবহার করত না। শহরে রক্ষাকর্তা পুলিশ এবিষয়ে অসহায় ভাবে বলছেন ‘আমরা কিছু জানি না’। তাহলে আপনারা ইউনিফর্ম লাগিয়ে কি করছেন? এমনটাই প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে।

উত্তেজিত জনতা ফায়ার ব্রিগেডের সামনে রাস্তা আটকে দেন তখন অনেকগুলো বড় বড় গাড়ি আটকা পড়ে, পরে বাধ্য হয়ে তারা ফিরে যায়। তবে জনতা তাদের লাইসেন্স দেখতে চাইলে তারা দেখাতে পারেননি। তার অর্থ, লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি গুলোকে শহরে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ অফিসাররা।

মলিন শর্মা অত্যন্ত সদালাপী এবং পরিশ্রমী সাংবাদিক ছিলেন। শহরের প্রত্যেক ব্যক্তি তাকে শ্রদ্ধা করতেন এবং ভালোবাসতেন। তার মৃত্যুতে সাংবাদিক মহলের বিভিন্ন ব্যক্তি শহরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্ত্রী সীমা শর্মা, কন্যা ও বড় ভাই সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধকে রেখে গেছেন মলিন শর্মা। ঘটনার তদন্ত করে দোষীকে শাস্তি দেওয়া সহ শহরে রাতের বেলা টিপার ঢোকা পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।

যাদের দুর্নীতির ফলে প্রাণ হারালেন এই সর্বজনপ্রিয় সাংবাদিক, তাদের প্রকাশ্যে এনে শাস্তির দাবি করছে জনগণ।

Comments are closed.