ইঞ্জিনারিং পড়ুয়া শিলচরের প্রিয়ালীর মর্মান্তিক মৃত্যু ভূপালে
ভূপালে ইঞ্জিনারিং কলেজে পাঠরতা শিলচরের মেয়ে প্রিয়ালী শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নিল। আত্মহত্যার কারণ জানা না গেলেও এমন প্রতিভাবান ছাত্রীর এধরনের মৃত্যুতে শোকাহত তাঁর পরিবারবর্গ সহ আত্মীয়-স্বজনরা।শিলচরের বিশিষ্ট সংস্কৃতিকর্মী সন্তোষ দে’র কন্যা পিয়ালী শনিবার রাতে ভূপালে আত্মহত্যা করে। সোমবার তার মরদেহ শিলচর নিয়ে আসা হয়। এখানে উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের ভূপালে আর্কিটেকচারে ইঞ্জিনিয়ারিং করছিল প্রিয়ালী।ভূপালের ভাউরি এলাকায় স্কুলস অফ প্ল্যানিং এন্ড আর্কিটেকচার কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং এর শেষ সেমিষ্টারে পড়ত সে। আত্মহত্যার কারণ না জানা গেলেও তার বাবা সন্তোষ দে জানান, ছোটবেলা থেকেই খুব চাপা স্বভাবের ছিল প্রিয়ালী। আর সেজন্যই হয়তো একাকীত্বের ফলশ্রুতিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে।
এদিকে ভূপালের খাজাউরি পুলিশ স্টেশনের আধিকারিক এলডি মিশ্র জানান, শনিবার শেষ রাতে হোস্টেলের বিছানায় অচেতন অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে দেখতে পায়।তার সহপাঠীরা দরজার কী-হোলের মাধ্যমে প্রিয়ালীকে এমন অবস্থায় দেখে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। সঙ্গে সঙ্গে তারা স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে খবর পাঠায়। প্রিয়ালীর সহপাঠীদের সহায়তায় পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জানা যায়, প্রাথমিক তদন্তের পর প্রিয়ালীর বিছানার পাশে একটি উন্মুক্ত গ্যাস সিলিন্ডার এবং পাইপ উদ্ধার করা হয়। গলার ভেতরে গ্যাসের পাইপ ঢুকিয়ে প্রিয়ালী আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। সে কয়েকদিন আগে অনলাইনে গ্যাস সিলিন্ডার অর্ডার দিয়েছিল বলে জানা যায়।”জীবন থেকে আর কিছু পাওয়ার মতন নেই আমার, তাই বেঁচে থাকার কোনো ইচ্ছে নেই। আমার মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণভাবে আমি নিজেই দায়ী”। প্রিয়ালী এরকম একটি সুইসাইড নোট লিখে যায় বলে জানা যায়।
এদিকে আরো জানা গেছে, কয়েকদিন আগে প্রিয়ালী গোয়ায় ঘুরতে গিয়েছিল। তখন এক দুর্ঘটনায় সে পায়ের হাঁটুতে আঘাত পায়।সেই আঘাতের ফলে ব্যথার যন্ত্রণায় সে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিল বলে মেডিকেল রিপোর্টে জানা যায়। পুলিশ আধিকারিকের মতে, এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মুক্তির পথ হিসেবে সে হয়ত আত্মহত্যাকে বেছে নিয়েছে।
তিন মেয়ের মধ্যে সবথেকে বেশি পড়াশুনায় ভাল ছিল প্রিয়ালী। জানা গেল তার বাবার কাছ থেকে।ছোটবেলা থেকেই চাপা স্বভাবের ছিল। এমনকি বিশেষ কোন বন্ধু-বান্ধব ছিল না। নিজের চারপাশে নিজের মতো করে একটা গণ্ডি তৈরি করে নিয়েছিল। হয়তবা একাকীত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে না পারায় প্রিয়ালী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে, শিলচর শহরের সাংস্কৃতিক মহলে পরিচিত সন্তোষ দে মেয়ের সম্পর্কে একথাগুলো বলেন।
জানা গেছে, স্বামী স্বরূপানন্দের অখন্ড নিয়ম অনুযায়ী তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। পরিবারের লোকজন ছাড়াও বন্ধুবান্ধব আত্মীয় পরিজন সবাই এভাবে অসময়ে প্রিয়ালীর চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না। শোকের ছায়া নেমে এসেছে সর্বত্র।
Comments are closed.