এনআরসি আতঙ্কে আবার আত্মহত্যা, এবার হাইলাকান্দিতে
এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যুমিছিল চলছে। সর্বশেষ সংযোজন হাইলাকান্দির গৃহবধূ সাবিত্রী রায়; এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকায় আতঙ্কে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন হাইলাকান্দি স্টেশন রোডের বাসিন্দা গৃহবধূ সাবিত্রী রায়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেবব্রত রায়ের পত্নী সাবিত্রী দেবী বুধবার দুপুর একটা নাগাদ বাথরুমে ঢুকে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন, মুহুর্তের মধ্যে দাউদাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত শরীরে। বাথরুম থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে আগুন নেভাবার চেষ্টা করেন, কিন্তু ততক্ষণে সাবিত্রী দেবীর শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে স্বামী দেবব্রত রায় ও ভাসুর মহাব্রত রায় হাইলাকান্দি এসকে রায় সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু অবস্থা গুরুতর থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে শিলচর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। শিলচর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই প্রায় পাঁচটা নাগাদ তার মৃত্যু ঘটে।
এনআরসি তে নাম না আসার কারণে পুত্রবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করে বৃদ্ধা শ্বাশুরি মীরা রায় জানান, সাবিত্রীর বাড়ি আগরতলায়; আর এনআরসিতে নাম উঠানোর জন্য তাদের পরিবারের সকলের নামের প্রয়োজনীয় যাবতীয় নথিপত্র জমা করা হয়েছিল। সাবিত্রীর পিতা মধুসূদন সাহার নাম থাকা ত্রিপুরার ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকার সার্টিফাইড কপি জাতীয় নাগরিকপঞ্জির আবেদনে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর বোঝা যায় যে পরিবারের বাকি সকলের নাম থাকলেও সাবিত্রী দেবীর নাম তালিকাতে সন্নিবিষ্ট হয়নি। হতাশাগ্রস্ত হয়ে মানসিক যন্ত্রণায় সাবিত্রী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে জানান মীরা রায়।
এই ঘটনায় উপত্যকায় জোরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Comments are closed.