Also read in

কুড়ালের আঘাতে প্রাণ হারালেন জিরিঘাটের কৃষক, ৪০ হাজার টাকা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যের জের

 

মাত্র ৪০ হাজার টাকার লেনদেন নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে প্রাণ গেল ৬০ বছরের সিরাজুদ্দীনের। বুধবার সকালে মাথায় কুড়ালের আঘাতে প্রাণ গেছে পেশায় কৃষক সিরাজ উদ্দিনের। হামলায় তার ছেলে আজাহার হোসেন গুরুতরভাবে আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, তাকে শিলংয়ের নিগ্রিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্মীপুর বিধানসভা সমষ্টির অন্তর্গত জিরিঘাটের মাখন নগর গ্রামে। স্থানীয় পাঠশালার সামনে একজন ব্যক্তি সিরাজ উদ্দিনের ছেলে আজহারের ওপর হামলা করে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মাথার একপাশে কুড়ালের আঘাত লাগে তার। সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরিবারের লোকেরা তাকে সঙ্গে সঙ্গে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তাররা জানান তিনি অনেক আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
আজাহার হোসেনের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, তার গায়ে বেশ কয়েকটি গভীর আঘাত রয়েছে, হাত এবং পায়ের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গিয়েছে। শিলচর মেডিকেল কলেজের ডাক্তাররা বুধবার বিকেলে জানিয়ে দিয়েছেন তাকে তাড়াতাড়ি করে শিলংয়ের নেইগ্রিমসে নিয়ে যেতে হবে। মাথায় চোট পাওয়ায় তার মানসিক অবস্থাও স্বাভাবিক বলে মনে করছেন না ডাক্তাররা।

আজাহারের স্ত্রী ফরহানা বেগমের অভিযোগ, তার ভাইয়েরা মিলে তার স্বামীকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। তার ভাই জমিল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন,
তাজ উদ্দীন, দিলওয়ার হোসেন, ভগ্নিপতি আবদুল রহমান সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে বুধবার সকালে আজহারকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাস্তায় তার উপর বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে আঘাত করে এবং তাকে বাঁচাতেই সিরাজ উদ্দিন প্রাণ হারিয়েছেন। একই সুরে নিহত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে সজমুল হসেন বলেন, একমাস আগে ৪০ হাজার টাকা লেনদেন নিয়ে আমার ভাই এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের মধ্যে ঝগড়া হয়। তারা আমার ভাইকে তখনও মারার চেষ্টা করেছিল, এতে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাই। পড়ে জিরিঘাট থানায় পুলিশ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের মধ্যস্থতায় একটি বৈঠকে ঘটনাটি মীমাংসা করার চেষ্টা করা হয়। তবে তারা এগুলো মানতে রাজি হয়নি, বৈঠক শেষে হুমকি দিয়ে গেছিল আমাদের আবার মারবে। আমরা পুলিশ এবং পঞ্চায়েতের সামনে এভাবে কথা বলার বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু এতে কোন লাভ হয়নি, তারা আজ খুব পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে মারার চেষ্টা করে এবং ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আমার বাবা প্রাণ হারান। আমার ভাইয়ের হাত-পা ভেঙে গিয়েছে এবং শরীরে গভীর ক্ষত রয়েছে। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা হবেনা। ডাক্তাররা যেভাবে বলছেন আমরা হয়তো আগামীতে তাকেও হারাতে চলেছি। সকালে এলাকায় একটি খুন হয়েছে এবং আরেকজন জখম হয়েছে পুলিশের তরফে এখনো অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

Comments are closed.

error: Content is protected !!