শিলচরের পতিতাপল্লি থেকে উদ্ধার হল নেপালের সাত কিশোরী-যুবতী, আটক মক্ষীরানী
নেপালের সাতটি মেয়ে, তাদের স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল আরও ভালো জীবনের। সেই সঙ্গে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল ভালো স্বামী পাওয়ার। কিন্তু এর কোনোটাই হয়নি। অথচ শেষ পর্যন্ত তাদের স্থান হয়েছিল শিলচরের পতিতালয়ে। বাধ্য করা হয়েছিল পেশা হিসেবে পতিতাবৃত্তি গ্রহণ করতে। প্রতিবেশী দেশ নেপালের সেই সাতটি মেয়েকে আজ এক বড় ধরনের উদ্ধার কার্য চালিয়ে শিলচরের ফাটক বাজারের কাছে রাধামাধব রোডের (১৪ নং হিসেবে খ্যাত) পতিতালয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা শেষ পর্যন্ত নেপালের এনজিও শক্তি সমুহ এবং দিল্লির একটি এনজিও এবং কাছাড় পুলিশের সহায়তায় মুক্ত হয়।
নেপালের একটি এনজিও শক্তি সমূহ তার দল নিয়ে শনিবার শিলচরে পৌঁছে ছিল। এনজিওদ্বয় কাছাড় পুলিশের সহযোগিতায় রবিবার সন্ধ্যায় এক অভিযান চালায়। এ বছরের ১৪ জুলাই এই এনজিও’র নেতৃত্বে পতিতালয়ে অভিযান চালিয়ে নেপালি বংশোদ্ভূত একটি মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই মেয়েটির কাছ থেকে পতিতালয়ে অবস্থানরত অন্যান্য নেপালি মেয়েদের কথা জানতে পেরে পুনরায় এই অভিযান চালানো হয়।
এনজিও শক্তি সমূহ’র আইনজীবী ও প্রশিক্ষণ উপদেষ্টা জানান,” সাতটি মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন নাবালিকা এবং তিনজনের বয়স কুড়ি বছরের কম।”
শিলচর সদর থানার বাইরে অপেক্ষারত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় ঐ ব্যক্তি জানান,” ১৪ জুলাই উদ্ধারকৃত মেয়েটির মাধ্যমে অন্যান্য নেপালি মেয়েদের সম্পর্কে খবর পেয়ে এই উদ্ধারকার্য চালানো হয়।” তিনি আরো জানান,” যে মহিলা এই মেয়েদেরকে পতিতাবৃত্তির কাজ করতে বাধ্য করেছেন সেই লক্ষ্মী তামাংকে দায়ের করা এফআইআর’র ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
“উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে উত্তরপ্রদেশের আগ্রা থেকে শিলচরে নিয়ে আসা হয়েছিল। এদিকে এই সাত জনকে উদ্ধারের বিষয়ে দূতাবাসকে জানানো হয়েছে এবং আগামীকাল শিলচরের আদালতে হাজির করা হলে তাদেরকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে আমরা সক্ষম হবো” উল্লেখ করেন তিনি। জানা গেছে, মক্ষীরানী লক্ষ্মী তামাংয়ের বাড়ি ও নেপালে। একসময় শিলচর নিষিদ্ধ পল্লীতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ শুরুর পর বর্তমানে ঐ মহিলা অন্যদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে এনে ব্যবসা চালায় । দিল্লি, আগ্রা এবং আসানসোলের নিষিদ্ধ পল্লীতেও রয়েছে তার যোগাযোগ
এদিকে শিলচরের পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,” পতিতালয় থেকে উদ্ধার করার পর সাত জন মেয়ে জানায় যে, তাদেরকে জোর করে এখানে আনা হয়নি। তারা যেহেতু প্রাপ্তবয়স্ক তাই এখানে নিজের ইচ্ছায় এসেছে এবং ভালো আছে।” আগামীকাল তাদের মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে এবং আদালতে পেশ করা হবে।
Comments are closed.