Also read in

আগামী ৩মে পর্যন্ত বাড়ছে লকডাউন, আগামীকাল আসছে স্পষ্ট নির্দেশ নামা, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জানালেন প্রধানমন্ত্রী

আজ সকাল ১০ টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী কি ঘোষণা করবেন , জল্পনা-কল্পনা চলছিল কতদিন বাড়বে লকডাউন, সমগ্র দেশ জুড়ে বাড়বে নাকি জোন ভিত্তিক।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে জানান, বিভিন্ন রাজ্য সরকার এবং সংস্থার সাথে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী ৩মে পর্যন্ত সমগ্র দেশে লকডাউন থাকবে। আগামী এক সপ্তাহ আরো কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হবে। আগামীকাল এই বিষয়ে বিস্তারিত নীতি নির্দেশিকা জারি করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে জানান, দেশে যথেষ্ট পরিমাণ ঔষধ এবং খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় এক লক্ষ রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। ৬০০ র ও বেশি হাসপাতাল শুধু করার জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে।

এই করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় তথা রেহাই পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সপ্তপদী অর্থাৎ সাতটি সুনির্দিষ্ট পন্থা অবলম্বন করতে সবাইকে আহবান জানিয়েছেন।

প্রকৃতি গৃহে বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। যাদের কোনো অসুখবিসুখ ইতিমধ্যেই রয়েছে ওদেরকে বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

লকডাউন এবং সামাজিক দূরত্ব ভালভাবে পালন করতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, তা করে বাড়ানো হতে পারে।

নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আয়ুস মন্ত্রণালয়ের তরফে যে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা পালন করতে হবে ‌।

আরোগ্য সেতু মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে এবং অন্যদেরকেও ডাউনলোড করে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে উৎসাহিত করতে হবে।

যতটুক সম্ভব গরিবদের একটু সেবা-যত্ন করার চেষ্টা করতে হবে, ওদের খাবার দাবারের ব্যাবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে।

নিজের ব্যবসা এবং অন্যান্য উদ্যোগে যারা কাজ করেন তাদের প্রতি একটু সহানুভূতি রাখতে হবে। তাদের কাউকে চাকরি থেকে ছাঁটাই না করতে আবেদন জানান প্রধানমন্ত্রী।

দেশের করোণার বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করছে অর্থাৎ ডাক্তার-নার্স, সাফাই কর্মী পুলিশকর্মী, এরকম আরো অনেক আছে তাদেরকে সম্মান ও সমাধান করতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী ভাষণের শুরুতেই বলেন, “আপনাদের সাহায্য সহযোগীতায় ভারত এখন পর্যন্ত ক্ষতি অনেক কম করতে সক্ষম হয়েছে। বুঝতে পারছি সবারই অনেক অসুবিধা হচ্ছে, কারো খাবার মিলছে না কারোর আসা-যাওয়া, চলাফেরা করার অনেক কষ্ট হচ্ছে, কেউ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অনেক দূরে রয়েছেন। কিন্তু দেশের এক একনিষ্ঠ সৈনিক হিসাবে আপনারা আপনাদের কর্তব্য পালন করে চলেছেন, এজন্য আমি আপনাদের নমস্কার করি।”

“আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘উইথ দ্যা পিপল অব ইন্ডিয়া’ দিয়ে শুরু হয়েছে, এটাই এখন স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে। আজ সংবিধানপ্রণেতা বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকর জন্ম দিন। আমি সমগ্র দেশ বাসীর তরফ থেকে তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। এই নববর্ষে আমি আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”

গান মন্ত্রী আরও জানান, আমাদের দেশে যখন কোনো সংক্রমণ শুরু হয়নি তখন থেকেই আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। বিদেশ থেকে আসা প্রত্যেক বিমানযাত্রীর পরীক্ষা শুরু হয়েছিল, পরবর্তীতে আইসোলেশনেও রাখা শুরু হয়েছিল। যখন আমাদের দেশে মাত্র ৫৫০ টি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল, তখনই আমরা ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিলাম। এই সংকটময় মুহুর্তে কোন দেশের সাথে তুলনা করা উচিত নয়। তবুও এটা সত্যি যে, অনেক শক্তিশালী দেশের কোরানা সংক্রমনের হিসেব-নিকেশ দেখলে বোঝা যায় ভারত অনেক মজবুত স্থিতিতে রয়েছে। ভারত যদি সময়ের দাবি মেনে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ না করতো, তাহলে আজ কি পরিস্থিতি হতো তা কল্পনা করা ও মুস্কিল। সামাজিক দূরত্ব এবং লকডাউন এ অনেক বড় লাভ হয়েছে দেশের। এর জন্য আমাদের অনেক মূল্য চোকাতে হয়েছে, কিন্তু দেশবাসীর জীবনের তুলনায় তা কিছুই নয়।

Comments are closed.