Also read in

সিভিল হাসপাতালে ফুটফুটে বাচ্চার জন্ম দিলেন সড়কের পাশে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা

রেল স্টেশন বা শিলচর শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন মহিলাদের দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময়ে তাদের খাবার জোগান শহরের মানুষ তবে এদের সুরক্ষা নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়না। আজ সতীন্দ্রমোহন দেব সিভিল হাসপাতালে এরকমই একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা একটি মেয়ের জন্ম দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সদরঘাট এলাকা থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন গর্ভবতী মহিলাকে উদ্ধার করে পুলিশ, এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাচ্চার জন্ম দিয়ে তিনি আরও অসহায় হয়ে পড়েছেন, কারণ এখনও কেউ বাচ্চার মায়ের খবর নিতে আসেননি।

ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ শান্তনু দাস সদরঘাট সেতুর পাশে মানসিক ভারসাম্যহীন গর্ভবতী মহিলাকে দেখতে পেয়ে সিভিল হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছিলেন। সেখানে ডাক্তাররা তার চিকিৎসা করেছেন এবং ২৪ ঘন্টা পর তিনি এক শিশুকন্যা প্রসব করেছেন। শান্তনু দাস জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে রংপুরের সদরঘাট সেতু সংলগ্ন এলাকায় মহিলাটিকে রাস্তার পাশে বসে যন্ত্রণায় কাঁদতে দেখেন তার আধিকারিকরা। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি এবং পুলিশের মহিলা আধিকারিকদের সহায়তায় তাকে সিভিল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও মহিলাটি ডাক্তারদের সঙ্গে চিকিৎসায় সহায়তা করেন। এখনও কেউ তার খবর নেয়নি, তার কোনও পরিবারে রয়েছে কিনা এটাও জানা নেই। তবে পুলিশ এব্যাপারে খোঁজ করছে। যদি কেউ তার দায়িত্ব নিতে রাজি না হন, তাহলে সরকারিভাবে কোনও হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হতে পারে।

সতীন্দ্রমোহন দেব সিভিল হাসপাতালের সুপার ডাঃ আশুতোষ বর্মন জানিয়েছেন, মা এবং শিশু সুস্থ আছেন। যতদিন পর্যন্ত প্রয়োজন ততদিন সিভিল হাসপাতালে তাদের চিকিৎসাধীন রাখা হবে। যদি কেউ এসে শিশুটির দায়িত্ব নেয় তবে ভালো। এটা না হলে আমরা তার চিকিৎসা এবং খাবার ব্যবস্থা এখানে আপাতত করছি। পরে পুলিশের আধিকারিকরা ঠিক করবেন মহিলাটি তার সন্তানকে নিয়ে কোথায় থাকবেন।

এই লকডাউনে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটে থাকা মানুষদের খাবার যোগাচ্ছে। তবে সারারাত ধরে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা এই মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে কোন কাজ হয়না। মহিলাটি কিভাবে গর্ভবতী হলেন এবং এতদিন এই অবস্থায় কোথায় ছিলেন এটা নিয়েও প্রশ্ন রয়ে গেছে। তাহলে কি শহরের রাস্তার পাশে অসহায় ভাবে দিন কাটানো মহিলারাও লম্পটদের যৌন লালসার শিকার হচ্ছেন? অতীতে অনেক সময় সাধারণ মানুষ রাতের বেলা নেশাগ্রস্ত লম্পটদের হাত থেকে এ ধরনের মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাদের রক্ষা করেছেন। তবে এই ঘটনা আবার অনেক প্রশ্ন উসকে দিয়েছে।

Comments are closed.