দুই বছর সাত দিনের বন্দিদশা কাটলো, সুপ্রিম নির্দেশে ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন সিদ্দিক আলি
শেষ পর্যন্ত শিলচর সেন্ট্রাল জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন সিদ্দেক আলি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাকে জামিনে মুক্ত করা হয়। ডিটেনশন ক্যাম্পে দুই বছর থাকার পর আপাতত জামিনে মুক্তি পেলেন সিদ্দেক।
৬৯ বছর বয়সী সিদ্দেক আলিকে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে হাফলং ফরেনার্স ট্রাইবুনাল থেকে বিদেশি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ ধরনের রায়ের বিরুদ্ধে যে কেইস করা যায় সেটাও জানা ছিল না দিনমজুর সিদ্দেক আলির। তাই কোন ধরনের লড়াই ছাড়াই ২০১৮ সালের ৫ জুন তাকে শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। হাতিখালি থানা থেকে পুলিশ এসে সোজা তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
প্রয়াত মসদ্দার আলির ছেলে সিদ্দিক আলি আগে হোজাইতে থাকতেন। ১৯৬৫ সালে তিনি কাটলিছড়া থাকার সময় ভোটার তালিকায় তার নাম ছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৭,২০০৫ এবং ২০১৬ সালের ভোটার তালিকায়ও তার নাম ছিল বলে জানা যায়। পরে তিনি কর্মসূত্রে ডিমা হাছাও জেলার হাতিখালিতে চলে যান। এখানেই তার ভাড়া বাড়িতে একদিন পুলিশ বিদেশে বলে নোটিশ লাগিয়ে চলে যায়। সিদ্দিক আলি ও তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম পড়াশোনা না জানার দরুন এই নোটিশের গুরুত্ব ততটা বুঝতে পারেনি। আর তাই এর বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা ভাবতেও পারেননি। ফলে পরবর্তীতে পুলিশ তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেয়।
জানা যায়, তার মেয়ে আম্মা বেগম ক্লাস ফোরে এবং ছেলে ইকবাল হোসেন ক্লাস নাইনে পড়ছে।হাতিখালির একটি সরকারি স্কুলে। সিদ্দিক আলির স্ত্রী রাবেয়া বেগম এখনো অনেক কষ্টে সংসার চালান। কোনোক্রমে দুই ছেলেমেয়েকে সামলাচ্ছেন। সিদ্দেক আলির ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে জামিনে মুক্তির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজে ছুটে আসেন স্বামীকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আগামীতে তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে জানা না থাকলেও আজকের দিনটি তারা খুশিতে কাটাতে চান। দু’বছর পর আবার তার পরিবারের সঙ্গে একই ছাদের নিচে থাকার সুযোগ পেলেন সিদ্দিক আলি।
Comments are closed.