জিন পাল্টে আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়েছে করোনা ভাইরাস, ফলে বাড়ছে মৃত্যুর হার: ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত
শিলচর, ১৪ জুলাই।।
সময়ের সঙ্গে নিজের মধ্যে জিনগত পরিবর্তন আনছে করোনা ভাইরাস এবং হয়ে উঠছে আরও শক্তিশালী। আমাদের রাজ্যে আগে থেকে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হয়েছে, এর মধ্যে বেশিরভাগ যুবপ্রজন্মের। এতে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ভেতরে ভেতরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আমরা আগে থেকে নিজেদের তৈরি রাখার চেষ্টা করছি, আগামীতে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, এমনটাই বললেন শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপাধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত।
মঙ্গলবার সরকারি সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে কথাগুলো বলেন তিনি। একজন বরিষ্ঠ চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি শিলচর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ এবং একজন দক্ষ শিক্ষক তিনি। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার প্রথম থেকেই অন্যান্য চিকিৎসকদের মতোই তিনি লাগাতার পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কাছাড় জেলায় স্থানীয়ভাবে যে নিয়ম-কানুন তৈরি করা হয়েছিল, এগুলো বানাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় তার স্বরূপ পাল্টে আক্রমণের গতি তীব্র করেছিল। এবার আমাদের রাজ্যে একই অবস্থা দেখা দিচ্ছে। এখন মৃত্যুর হার আগের থেকে অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই এটা বলাই যায় ভাইরাসের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে।”
শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “বরাক উপত্যকার সবথেকে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিজেকে আগের থেকে অনেক বেশি তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে আমরা জানিনা। হাসপাতালে কোভিড জোন পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে আকারে বড় হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগকে এতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন মোট ১০টি আইসিইউ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে, রয়েছে ত্রিশটি ভেন্টিলেশন। প্রয়োজনে এই ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এক সময় যদি কোনও সরকারি হাসপাতালে আর জায়গা না থাকে তখন শর্তসাপেক্ষে রোগীদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করা হবে। তবে এক্ষেত্রে কিছু পরিষ্কার শর্ত রয়েছে যেগুলো পালন করতে না পারলে রোগীদের বাড়িতে থাকার অনুমতি মিলবে না।”
তিনি জানান, শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ৪৬০৩০ টি স্যাম্পল পরীক্ষা হয়েছে। মোট ১১২৯ জন পজিটিভ হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪০৪জন, ছাড়া পেয়েছেন ২৮৮ জন, দুজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১৪ জন। প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মনিকা দেবকে মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। দুদিন আগেই তার রেজাল্ট নেগেটিভ হয়েছিল, তবে নিয়ম অনুযায়ী ১০ দিন পর্যন্ত তাকে চিকিৎসার অধীনে থাকতে হতো, তাই মঙ্গলবার তার মুক্তি হয়েছে, তবে তিনি সরাসরি জনসমাগমে যোগ দিতে পারবেন না। আরও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সাংসদ সুস্মিতা দেবের দ্বিতীয় টেস্টের জন্য সোয়াব স্যাম্পল মঙ্গলবার সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামীতে তার রিপোর্ট এলে জানা যাবে তিনি পজেটিভ না নেগেটিভ।
Comments are closed.