করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হাইলাকান্দির অভিভাবকহীন সদ্যোজাত, দু'দিন বয়সে হয়েছিল পজিটিভ
সম্প্রতি হাইলাকান্দিতে অভিভাবকহীন সদ্যোজাত শিশুকে উদ্ধার করেছিল চাইল্ড হেল্পলাইন বিভাগ। শিশুটিকে কাছাড় জেলার নিবেদিতা নারী সংস্থায় পাঠানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী তার সোয়াব স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য শিলচর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয় এবং রেজাল্ট পজিটিভ আসে। প্রায় ১০ দিনের মাথায় তার রেজাল্ট নেগেটিভ হয়েছে। এটি উপত্যকায় সবথেকে কম বয়সে করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার ঘটনা। অপরদিকে কিছুদিন আগে ৯১ বছর বয়সের এক মহিলা আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে জনমনে অহেতুক ভয় হয়তো কিছুটা কমবে।
২৯ জুলাই হাইলাকান্দি শহরে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি নবজাতক কন্যাকে উদ্ধার করেছিল চাইল্ড হেল্পলাইন। উদ্ধার হওয়ার পর তাকে শিলচরের নিবেদিতা নারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী তার সোয়াব স্যাম্পল শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। মাত্র দুই দিন বয়সে পজিটিভ হয় শিশুটি, তাই নারী সংস্থার কার্যালয়ে দেখি তার চিকিৎসা করানো হয়। এর আগে শিলচর মেডিকেল কলেজে ৬ দিন এবং ৮ দিন বয়সের দুটি শিশু করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তারা দুজনেই বিশেষ তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিবেদিতা নারী সংস্থার পক্ষ থেকে দিবা রায় জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়ার পর শিশুটিকে সুরক্ষিত ভাবে রাখার জন্যই নিবেদিতা নারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। সংস্থার পক্ষ থেকে শিশুটির একটি নামও রাখা হয়েছে। অনেকেই শিশুটিকে গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন, তবে এখনই কারও হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। তবে জেলা প্রশাসনের প্রতি অভিযোগ রয়েছে দিবা রায়ের। তিনি বলেন, শিশুটিকে ভেতরে রেখেই বাইরে থেকে কনটেইনমেন্ট জোনের বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন বয়সের শিশুরা থাকে, কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য কোন খাবার ঔষধ বা পত্র পাঠানো হয়নি। এছাড়া কোন শিশু বা অন্য ব্যক্তির স্যাম্পল পরীক্ষাও হয়নি। শেষমেষ গুয়াহাটির শিশু সুরক্ষা বিভাগে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতে কাজ হয়, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার প্রত্যেকের পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হাইলাকান্দি থেকে শিশুটিকে কাছাড়ে নিয়ে আসার পর স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক সুমন চৌধুরী বলেন, “আমরা যদি অসুবিধা গুলো জানতে না পারি তাহলে কিভাবে সমাধান করব? অসুবিধাগুলো নিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি। নিবেদিতা নারী সংস্থার পক্ষ থেকে গুয়াহাটির শিশু সুরক্ষা বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে এরপরেই স্থানীয় প্রশাসন অসুবিধার কথা জানতে পেরেছে। জানার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ডাক্তার পাঠানো হয়েছে। আগামীতে অন্যান্য শিশুদের স্যাম্পল পরীক্ষা করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী এবং ঔষধপত্র পাঠানো হবে।”
Comments are closed.