আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সাধারণ রোগীদের জন্য খুলছে মেডিক্যালের সার্জারি বিভাগ
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রথম দিকেই শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কয়েকজন পজিটিভ হন। এরপর থেকে বিভাগটি কোভিড ওয়ার্ডে পরিণত হয়েছে। এতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে পুরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা। বিশেষ করে বিভাগের আইসিইউ কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি পিএম কেয়ারের পক্ষ থেকে ৪০টি ভেন্টিলেটর পাঠানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে এগুলো বসিয়ে একটি পুরো আইসিইউ ওয়ার্ড তৈরি হচ্ছে হাসপাতালে। এটি সফলভাবে করতে পারলে এবং কোভিড সংক্রমনের ধারা হঠাৎ করে বৃদ্ধি না পেলে, ধীরে ধীরে সার্জারি বিভাগ সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুলে দেওয়া হবে, এমনটাই জানিয়েছেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া।
সম্প্রতি যেসব ভেন্টিলেটর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, সেগুলো বসিয়ে আইসিইউ ওয়ার্ড গড়ে তোলার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছেন হাসপাতালে কর্মীরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিডের জন্যই পুরো বিভাগ ব্যবহার করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এটি অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত লাভদায়ক হবে। এখন শিলচর মেডিক্যিল কলেজে ১৬টি আইসিইউ কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরোপুরি গড়ে উঠলে সেখানে ভিভিআইপি আইসিইউ থাকবে, যেটা আগে হাসপাতালে ছিল না। ভেন্টিলেটর এবং তার সঙ্গে বিশেষ শয্যা বসিয়ে পুরো ওয়ার্ড প্রথমে সাজিয়ে তোলা হবে। এরপর সম্পূর্ণ ওয়ার্ডকে স্যানিটাইজ করার কাজ চলবে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর চিকিৎসকরা পরীক্ষা করবেন, এটি রোগীদের থাকার যোগ্য হয়ে উঠেছে কিনা। এরপর সংকটজনক রোগীদের সেখানে পাঠানো হবে। এতে প্রায় ১০দিন সময় লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।
এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য ওয়ার্ডের আইসিইউ গুলো সাধারণ রোগীদের কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সার্জারি বিভাগ ছাড়াও অর্থোপেডিক্স বিভাগের আইসিইউ কোভিডের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। একটি সম্পূর্ণ আইসিইউ ওয়ার্ড যখন কোভিড রোগীদের জন্য তৈরি হয়ে যাবে, তখন ধীরে ধীরে অন্যান্য বিভাগগুলোর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যদি হঠাৎ করে অস্বাভাবিক সংখ্যায় রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু না করে তাহলে সার্জারি বিভাগকে আবার পুরনো ছন্দে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। আশা করা যাচ্ছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি এমনটাই দাঁড়াবে।
শনিবার সাংসদ রাজদীপ রায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং ভেন্টিলেটর গুলো বসানোর প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি জানিয়েছেন, পুরোপুরি আইসিইউ ওয়ার্ড চালানোর জন্য যেসব চিকিৎসক এবং নার্সের প্রয়োজন সেটা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ৩০ জন নার্স দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই কাজে যোগ দিয়েছেন। প্রয়োজনে আরো স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসক নিযুক্তির জন্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
Comments are closed.