Also read in

প্রয়াত হলেন করিমগঞ্জ বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা রথীন্দ্র ভট্টাচার্য, শোক বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

৭২ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হন করিমগঞ্জ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা বরিষ্ঠ আরএসএস কার্যকর্তা রথীন্দ্র ভট্টাচার্যের। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ডে প্রায় ১০ দিন থাকেন এবং করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত হন। তবে করোনাকে হারালেও ক্যান্সার তার প্রাণ কেড়ে নেয়। বুধবার সকালে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার মৃত্যুতে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল শোক ব্যক্ত করেছেন। তার হয়ে জেলাশাসক আনবামুথান এমপি রথীন্দ্র ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।

করিমগঞ্জ তথা বরাক উপত্যকার প্রবীণ সমাজসেবী ,রাজিনীতিবিদ, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন রথীন্দ্র ভট্টাচার্য। তিনি অবিবাহিত ছিলেন এবং সারা জীবন আরএসএস এবং বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একজন নিঃস্বার্থ এবং দক্ষ সংগঠক হিসেবে বরাক উপত্যকায় তাকে প্রত্যেকেই শ্রদ্ধা করতেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কিছুদিন আগে তার দেহে করোনা সংক্রমন হয়। প্রথমে করিমগঞ্জ পরে শিলচর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার তিনি করোনা মুক্ত হন। বুধবার সকাল ৭-১২ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের প্রাক্তন জেলা সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সহ সভাপতি ছিলেন। পর পর দুবার করিমগঞ্জ জেলা বিজেপির সভাপতি ছিলেন।

শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় তার অ্যাটেন্ডেন্ট হিসেবে সঙ্গী ছিলেন বড় ভাইয়ের জামাতা অশোক ভট্টাচার্য। সোমবার রাতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছেন অর্থাৎ তার রেজাল্ট নিগেটিভ এসেছে। তখন কোভিড আইসিইউ থেকে তাকে সরিয়ে সাধারণ আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার শেষ রাতেই স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে পরিবারকে ব্যাপারটি জানানো হয়, বুধবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল তার মৃত্যুতে শোক ব্যক্ত করেছেন। তিনি পরিবারের কাছে ফোন করে সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি করিমগঞ্জের জেলাশাসক আনবামুথান এমপিকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি যেন রাজ্য সরকারের হয়ে রথীন্দ্র ভট্টাচার্যের শেষকৃত্যে অংশ নেন এবং তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।

করিমগঞ্জ জেলা বিজেপির সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, করিমগঞ্জ সহ উপত্যকার প্রত্যেক বিজেপি কার্যকর্তা তার মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র বিজেপি নয়, তিনি প্রত্যেক দলের কার্যকর্তাদের কাছে প্রিয় ছিলেন। তার ব্যক্তিত্ব এমনটাই ছিল, যে প্রত্যেকে তাকে শ্রদ্ধা করতেন এবং তার কাছে রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ নিতে আসতেন। তার অবদান শুধুমাত্র কথায় ব্যক্ত করতে পারছি না, তিনি করিমগঞ্জ জেলার এনসাইক্লোপিডিয়া ছিলেন। সব বিষয়ে তার জ্ঞান ছিল এবং তাকে হারিয়ে আমরা সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।”

তিনি জানান, রথীন্দ্র ভট্টাচার্যের মৃতদেহ প্রথমে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে করিমগঞ্জ রেডক্রস সোসাইটি, বঙ্গসাহিত্যের কার্যালয়, বিজেপি কার্যালয় সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে, এরপর শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। অবশ্যই পুরোটা হবে কোভিড প্রটোকল মেনে।

Comments are closed.