Also read in

অতিরিক্ত ভাড়া এবং বেশি প্যাসেঞ্জার নিয়ে কোভিড প্রটোকল ভাঙ্গার দায়ে আটক ১১টি অটোরিকশা

লকডাউন খোলার পর থেকে নতুন যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তবে এই নিয়ম মানছেন না শহরের অটোরিকশা এবং টুকটুক চালকরা। নিয়ম অনুযায়ী কম প্যাসেঞ্জার নিতে হবে, এই বাহানা দেখিয়ে চালকরা ভাড়া দ্বিগুণ করেছেন। এখন ধীরে ধীরে প্রায় প্রতিটি অটোচালক দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন, সঙ্গে অটোভর্তি প্যাসেঞ্জার নিচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না অন্যদিকে প্যাসেঞ্জারদের হেনস্থা হতে হচ্ছে। কেউ কেউ এব্যাপারে জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এতেই অভিযান চালানো হয় এবং বেশ কিছু অটোরিকশা আটক করা হয়।

পুলিশ এবং পরিবহন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এদিন রাঙ্গিরখাড়ি-আসাম বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক সহ শিলচরের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালানো হয় এবং চালকদের হাতেনাতে ধরা হয়। বিভাগের পক্ষ থেকে সিদ্ধার্ত শইকীয়া এব্যাপারে বলেন, “আমরা জেলাশাসকের নির্দেশে অভিযানটি পরিকল্পনা করেছিলাম। দুই সপ্তাহ আগেও একই ধরনের অভিযান চালানো হয়েছিল, এতে কিছুটা লাভ হয়েছিল। তবে আবার অভিযোগ আসতে শুরু করেছে, চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন। এছাড়া নিয়ম ভেঙে পাঁচজন প্যাসেঞ্জার নিয়েছেন এমন কিছু অটোরিকশা চোখে পড়েছে। গাড়িগুলো আটক করে চালকদের বলা হয়েছে, তারা কেন এমনটা করলেন এব্যাপারে নিজেদের সাফাই তুলে ধরতে। যদি পর্যাপ্ত কারণ দেখাতে না পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে অন্যান্য চালকদের একটি বার্তা দেওয়া হচ্ছে তারা যাতে কোনোভাবেই নিয়ম না ভাঙেন।”

সমস্যা শুধু শহরেই সীমিত নয়, গ্রামাঞ্চলেও প্রয়োজনের বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। প্যাসেঞ্জারদের মতে প্রায় তিনগুণ ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে। যে দূরত্বে আগে ১৫ টাকা নেওয়া হতো সেখানে এখন অন্তত ৪০ টাকা নেওয়া হয়। মানুষের কাছে অটো এবং টুকটুক ছাড়া যানবাহনের অন্য কোনও বিকল্প নেই। এই সুযোগকে অনেকই কাজে লাগাচ্ছেন। একা যাত্রীরা কখনোই অটোচালকদের দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজেদের কথা বলার সুযোগ পান না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের কাছেও খবর পাঠানো হয়েছে, কিন্তু তারা এব্যাপারে চুপ। লকডাউনে যদি অটোচালকদের ক্ষতি হয়ে থাকে তবে সাধারণ মানুষেরও রোজগার বন্ধ ছিল। এই কথা বলার মতো কোনও জায়গা সাধারণ মানুষ খুঁজে পাচ্ছেন না।

এব্যাপারে সিদ্ধার্ত শইকীয়া বলেন, “পরিবহন নিয়মের অধীনে বিভিন্ন গাড়ির জন্য দূরত্ব মেপে রেট চার্ট রয়েছে। আগামীতে অটো এবং টুকটুকের জন্যও দূরত্ব মেপে ভাড়া নেওয়ার একটি তালিকা বানানো হবে এবং এগুলো সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হবে। এতে সাধারণ যাত্রীরা নিজেই চালকদের বলে দিতে পারবেন তারা ভাড়া বেশি নিচ্ছেন কিনা। তবে আমাদের দুই দিক ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। লকডাউনে চালকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পাশাপাশি জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে তাদের সঙ্গে বসেই আমরা তালিকা তৈরি করতে চাইছি।”

অটোচালকদের তরফ থেকে অত্যধিক ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে শিলচর শহরের অটোচালক এসোসিয়েশনের কাছে এব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তারা প্রশ্ন এড়িয়ে যান। কাছাড় অটোমালিক সংস্থা কো-অরডিনেশন কমিটির তরফে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রায়ই সোচ্চার থাকেন বিকাশ ভট্টাচার্য এবং তার সহযোগীরা। তবে এব্যাপারে তারা নীরব ভূমিকা পালন করছেন। এতে প্রমাণিত হচ্ছে জনগণের দুঃসময়ে তারা মুনাফাখোরদের পাশে রয়েছেন।

Comments are closed.