মূর্তি গড়া থেকে বিসর্জন, সবক্ষেত্রে বিধি নিষেধ জারি করে রীতিমতো বারোয়ারি পুজো উচ্ছেদ করল কাছাড় প্রশাসন
একদিকে যখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার কঠোর সুরক্ষা বিধি জারি করে দুর্গাপূজোর জৌলুস বজায় রাখতে চেষ্টা করছে আবার অন্যদিকে বিহারের মত জনবহুল রাজ্যে নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে। এই সময়ে দাঁড়িয়ে আক্ষরিক অর্থে বাঙালির দুর্গাপুজো পঙ্গু করার মতো নির্দেশ দিয়েছে কাছাড় জেলা প্রশাসন। অন্তত বারোয়ারি পুজো হচ্ছে না, এমনটা বলা যায়। অতীতে কোনওদিন পুজোর আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এতটা হস্তক্ষেপ করা হয়নি, এই প্রথম এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে।
শুধুমাত্র স্থায়ী মন্দির বা প্যান্ডেলে পুজো করার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। বলা হয়েছে, যেসব পুজো কমিটির নিজস্ব কংক্রিট প্যান্ডেল রয়েছে বা যেগুলো মন্দির রয়েছে সেখানে পূজা হবে, নতুন করে প্যান্ডেল বানিয়ে পুজো করা যাবে না। এক জায়গায় একটি পুজো করা যাবে।
সকাল পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত মন্ডপ খোলা রাখার অনুমতি রয়েছে। রাত দশটার পর কোনও পুজো প্যান্ডেল খোলা থাকবে না, অর্থাৎ এবার পুজোয় রাতে কোনও অনুষ্ঠান থাকছে না।
দুর্গা প্রতিমা নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পাঁচ ফুটের থেকে উচু হবেনা মূর্তি। পরিষ্কার ভাষায় বলে দেওয়া হয়েছে, এক কাঠামোয় মূর্তি বানাতে হবে।
অঞ্জলি প্রদানের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ জনের বেশি একসঙ্গে জড়ো হতে পারবেন না। অঞ্জলি প্রদানের ব্যাপারে সাধারণত পূজারী অথবা মন্দিরের কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়। একসঙ্গে ১০ জন অঞ্জলি দিলে সারাদিনেও প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হবে না।
কোনও ধরনের মাখা প্রসাদ বা খিচুড়ি বিতরণ করা চলবেনা। পুজোয় কেউ যদি ফলমূল বা খাদ্য সামগ্রী দিতে চান তাহলে ষষ্ঠীর আগে কমিটির কাছে গিয়ে কথাটি লিখিতভাবে জানাতে হবে। এমনটা না হলে পুজোয় কোনও ধরনের খাদ্য সামগ্রী দেওয়া যাবে না।
কোনও ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না, মাইকিং চলবে না। এছাড়া পুজোকে ঘিরে কোনও ধরনের চা, চাট ইত্যাদি স্টল বসানো যাবে না।
বিসর্জন অনুষ্ঠানে পাঁচ জনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। বিসর্জনে কোনও শোভাযাত্রা হবে না, বিসর্জন ঘাটে একসঙ্গে দুটো কমিটির মূর্তির বেশি প্রবেশ করবে না।
জেলাশাসকের স্বাক্ষর করা এই নির্দেশ নামার অর্থ হচ্ছে এই বছর শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার পূজোই হবে কাছাড় জেলায়।
Comments are closed.