Also read in

দশমীতে শিলচরে ১৩২টি প্রতিমা নিরঞ্জন, আরও দু'দিন চলবে বিসর্জন

কয়েক দশকে এই প্রথমবার দুর্গাপূজার দশমী রাত দশটায় সদরঘাট সংলগ্ন বিসর্জন ঘাটের গেট বন্ধ করা হলো। সোমবার মোট ১৩২টি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। এদিন সকাল আটটা থেকে অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নিয়ে আসা হয়। ছোটখাটো শুভযাত্রা হলেও বড় কোনও অনুষ্ঠান হয়নি এবং চোখে পড়েনি কোনও ধরনের ট্রাফিক জ্যাম। যদিও জেলাশাসকের নির্দেশ ছিল দশ জনের বেশি লোক বিসর্জনে আসতে পারবেন না, এই নিয়ম মানতে পারেননি জেলাশাসকের পুজো কমিটির সদস্যরাও। তারাও ছোটখাটো শোভাযাত্রার মাধ্যমেই প্রতিমা নিরঞ্জন করেছেন।

শিলচর পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন মোট ১২৫টি প্রতিমা বিসর্জনের কথা ছিল এর মধ্যে ৮০টি বারোয়ারি পুজোর এবং বাকি ৪৫ টি বাড়ির পুজোর। তবে কয়েকটি পুজো বাড়িতেই হয়েছে যার জন্য আলাদা করে কোনও পারমিশন নেওয়া হয়নি। সেগুলো বিসর্জনের জন্য এলে বাধা দেওয়া হয়নি স্বাভাবিক ছন্দেই বিসর্জন হয়েছে।

সারাদিন ধরে বিসর্জনের প্রক্রিয়া খুব স্বাভাবিক গতিতে চলতে থাকে। কেউ কেউ বিরাট প্রতিমা বাঁশের মাঁচাং বানিয়ে কাঁধে করে বিসর্জন ঘাটে নিয়ে এসেছেন। কোনও জাঁকজমক বা বড় সাউন্ড বক্সের উদ্দীপনা না থাকলেও, ঢাক বাজিয়ে নৃত্য করে অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে মায়ের প্রতিমা বিসর্জন করেছেন শহরের মানুষ।

এদিন বিসর্জন ঘাটে উপস্থিত হয়ে জেলাশাসক কীর্তি জাল্লি জেলার প্রত্যেক ব্যক্তিকে সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, “এত বড় উৎসব পালিত হয়েছে কিন্তু কোনও ধরনের নিয়ম ভঙ্গ হয়নি, এটা অবশ্যই আমাদের কাছে একটি প্রাপ্তি। জেলার প্রত্যেক মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছেন, তার জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।”

 

এই কথাগুলো বললেও পুজোর আগে তার উদ্ভট নির্দেশ নিয়ে জনগণকে ব্যাপক অশান্তি পেতে হয়েছে। তবে সেগুলো ভুলে সাধারণ মানুষ রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে পুজো করেছেন এবং অত্যন্ত সাবধানতার মাধ্যমে উৎসব পালিত হয়েছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে উৎসবের এই চারদিন অত্যন্ত সুশৃংখল পরিস্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা হয়েছে। তবে কোনও ব্যক্তির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেনি পুলিশ, এটাও একটি নজির।

দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের অধীনে আপদামিত্র বন্ধুরা কোভিড প্যানডেমিকের সময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এবং সাহসিকতার নজির গড়েছেন। বিসর্জনের ক্ষেত্রেও তারা বিশেষ অবদান রেখেছেন, তাদের সহায়তায় পুজো আয়োজকরা অত্যন্ত সুন্দরভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে পেরেছেন।

এদিন শিলচর রামকৃষ্ণ মিশনের বিসর্জন অনুষ্ঠান একদম আলাদা ছিল। কোনও দর্শনার্থীকে বিসর্জন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। স্বেচ্ছাসেবক এবং আশ্রমের সদস্যরা মিলে আশ্রমের পুকুরেই প্রতিমা নিরঞ্জন করেছেন। এমনকি শান্তিবাচন অনুষ্ঠানেও সাধারণ মানুষকে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। যাদের শান্তির জল নেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে, তারা পরবর্তীতে আশ্রমে যোগাযোগ করে সংগ্রহ এটি করতে পারবেন।

Comments are closed.

error: Content is protected !!