Also read in

আবার অসমের সরকারি বিদ্যালয়ে বোমা হামলা মিজো দুষ্কৃতীদের, গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো আরেকটি বিদ্যালয়

আবার অসমের বিদ্যালয়ে বোমা হামলা চালালো মিজো দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার রাতে অসম-মিজোরাম সীমান্ত সংলগ্ন খুলিছড়া এলাকায় একটি সরকারি বিদ্যালয়ে বোমা মেরে গুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও এতে কোনও মানুষ আহত হননি, তবে বিদ্যালয়টি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডিআইজি দিলীপ কুমার দে খবরটি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “শুক্রবার প্রায় রাত দেড়টা নাগাদ খুলিছড়া এলাকায় আপার পাইনম আপগ্রেডেড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বোমা হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। এতে বিদ্যালয়টি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগেও একটি বিদ্যালয়ে বোমা হামলা চালানো হয়েছিল, এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এলাকায় এসএসবি বাহিনীর টহলদারীতে আতঙ্কিত হয়েছে দুষ্কৃতীরা, তাই এধরনের একটি কাজ করেছে যাতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে রাখা যায়। তবে পরিস্থিতি এখন আর তাদের মতো চলবে না, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং আমাদের পুলিশ যৌথভাবে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। আমরা করিমগঞ্জেও একটি এসএসবি বাহিনীর ক্যাম্প বসিয়েছি, সেখানে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে লায়লাপুরে এখনও কিছু কিছু দুষ্কৃতীরা অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে যেটা আগামীতে নিয়ন্ত্রণে আসবে।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ঘটনার পর তারা বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন তবে সেখানেও তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “যে বিদ্যালয়ের আমি প্রধান শিক্ষক সেখানে আমাকে যেতে বাধা দিচ্ছে মিজো বাহিনী। তারা আমার বিদ্যালয় বোমা মেরে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে অথচ আমি দেখতে যেতে পারছি না। মিজোরামের পুলিশ এবং মানুষ বিদ্যালয়টিকে ঘিরে রেখেছেন। সেখানে অসমের কোনও মানুষের যাওয়ার অনুমতি নেই।”

রাজ্য সরকারের রেকর্ড অনুযায়ী আপার পাইনম আপগ্রেডেড এলপি স্কুল ২০০৯ সালে সরকারের অনুমোদন পায়। অসম সরকারের দ্বারা চালিত বিদ্যালয়টিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। দুটো ক্লাস রুম রয়েছে, শিক্ষক এবং অন্যান্য কর্মচারী রয়েছেন। স্কুলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১৮২১০৩২৮৩০১, এটি অবশ্যই অসম রাজ্যের সীমানার ভেতরে কাছাড় জেলার একটি সরকারি বিদ্যালয়।

সাধারণ প্রতিবাদ বা জমি দখল একদিকে, কিন্তু বোমা মেরে সরকারি বিদ্যালয় উড়িয়ে দেওয়া একটি সরাসরি সন্ত্রাসবাদি কার্যকলাপ। ২৪ অক্টোবর একই এলাকায় আরেকটি বিদ্যালয় এভাবে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হলো। শেষমেষ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মুখ্য সচিব জিষ্ণু বড়ুয়া এলাকা পরিদর্শন করেন। কেন্দ্র সরকারকে জানানো হয় এবং তারা সশস্ত্র সেনাবাহিনী পাঠায়। তবে মিজোরামের পক্ষ থেকে একের পর এক জঙ্গী কার্যকলাপ চলছে, আর অন্যদিকে তারা অসমের উপর দোষারোপ করছেন।

এব্যাপারে সরকার পক্ষের কারোর কাছ থেকে বক্তব্য না এলেও প্রাক্তন সংসদ সুস্মিতা দেব সোচ্চার হয়েছেন। তিনি বলেন, “আসাম এবং মিজোরামে নেডার অধীনে থাকা সত্ত্বেও হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। সরকার নিজের সাফল্য নিয়ে ফলাও করে সংবাদমাধ্যমে প্রচার করতে থাকলেও এসব ব্যাপারে তারা পুরোপুরি ব্যর্থ। রাজনীতি নয়, আমরা চাই এলাকার মানুষের সুরক্ষা, এভাবে চললে সাধারণ মানুষ হয়তো একসময় এলাকায় ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হবেন। এটুকু ন্যূনতম সুরক্ষা তাদের দেওয়া সরকারের কর্তব্য এবং আমি আশা করি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল নিজের কথা রাখবেন।”

Comments are closed.

error: Content is protected !!