অসম-মনিপুর সীমান্ত এলাকায় এক লক্ষ ডব্লুওয়াই ট্যাবলেট সহ আটক দুই পাচারকারী
অসম-মনিপুর সীমান্ত এলাকায় এক লক্ষ নিষিদ্ধ ডব্লুওয়াই ট্যাবলেট সহ দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আন্তর্জাতিক বাজারে এই ট্যাবলেটের মূল্য এক কোটি টাকার বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে পুলিশের অভিযানে লক্ষ্মীপুর বিধানসভার অন্তর্গত সীমান্ত এলাকায় নিষিদ্ধ ড্রাগ ট্যাবলেটগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের বয়ান অনুযায়ী, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে একটি বিশেষ দল আগে থেকেই এলাকায় ছক কষে বসেছিল। রাতে মনিপুর থেকে শিলচরগামী একটি ট্রাকে দশ বান্ডেল ওয়ার্ল্ডস ইয়ার্স (ডব্লুওয়াই) ট্যাবলেট আটক করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে এর অন্য নাম ইয়াবা ট্যাবলেট। এনএল ০১ এএ ৬৮১৬ নম্বরের গাড়িটি নাগাল্যান্ডের হলেও এটি মনিপুরের দিক থেকে আসছিল। গোয়েন্দাদের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল ট্রাকে করে বিরাট পরিমাণের নিষিদ্ধ ড্রাগস ট্যাবলেটগুলো নিয়ে আসা হচ্ছে। পুলিশের দল ড্রাগসের সঙ্গে দুই দুষ্কৃতিকে আটক করেছে। ড্রাগসের প্যাকেটগুলো ট্রাকের ড্রাইভারের সিটের নিচে রেখে দেয়া হয়েছিল। আটক দুই ব্যক্তির নাম হচ্ছে ইয়ান ইপেহ (২৭) এবং মাঙ ইপেহ (১৮), দুজনেই মনিপুরের চুরাচাঁদপুর জেলার বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার বিএল মিনা বলেন, “এটি এযাবত সবথেকে বড় অংকের আটক হওয়া ড্রাগসের ট্যাবলেট। লকডাউন শেষ হওয়ার পর যখন স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলতে শুরু করে, তখন এই দুষ্কৃতিরা আবার নিষিদ্ধ ড্রাগস পাচারের চেষ্টা শুরু করেছে। অতীতে আমাদের পুলিশ বহুবার এদের আটক করেছে এবং এবারও আমরা সফল ভাবে তাদের আটকাতে সমর্থ হয়েছি। এর বাজার মূল্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হতে পারে, বাংলাদেশে পাচার করতে পারলে এর মূল্য অনেক বেশি হয়ে যায়। তবে তারা ঠিক কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল এটা পরিষ্কার হয়নি। আন্তর্জাতিক ড্রাগস’র রুট নিয়ে অনেকেই কথা বলেন এবং আমরাও অনেক তথ্য সংগ্রহ করে রেখেছি যেটা হয়তো জনসমক্ষে বলা যাবে না। তবে আমাদের গোয়েন্দা এবং পুলিশ অত্যন্ত সক্রিয় তাই কাছাড়ে প্রবেশ করা খুব একটা সহজ হবে না।”
বরাক উপত্যকার ভৌগলিক অবস্থান এমন যেখানে মনিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা সহ বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। বিশেষ করে কাছাড় জেলার সঙ্গে এইসবগুলো রাজ্য এবং বাংলাদেশের সীমান্ত থাকায় বিভিন্ন সময়ে ড্রাগসের পাচারের চেষ্টা কাছাড়ের উপর দিয়ে চলে। গতবছর শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ড্রাগসের ট্যাবলেটগুলো প্যাকেটে করে ঢিল ছুঁড়ে ওপারে পাচার করে দিচ্ছে কিছু পাচারকারিরা। এসব খবর প্রকাশ্যে আসায় সীমান্ত বাহিনী সক্রিয় হয়। তবে এছাড়াও বিভিন্ন পদ্ধতিতে ড্রাগসের পাচার করতে চায় দুষ্কৃতিরা। এবার ট্রাকের ড্রাইভারের সিটের নিচে বসিয়ে বিরাট অঙ্কের ড্রাগস পাচার হচ্ছিল। হয়তো আগামীতে আরও অন্য কোনও পদ্ধতির মাধ্যমে এসবের চেষ্টা চলবে। যুব সমাজের মধ্যে ড্রাগসের পাচার একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Comments are closed.