Also read in
কাছাড় কাগজ কলে আচ্ছে দিনের ছোঁয়া, তিন মাসের বেতন পাচ্ছেন কর্মচারীরা
অর্থবছরের শেষদিন সম্ভবত বছরের সেরা খবরটি পেতে চলেছেন বরাক উপত্যকার সব থেকে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান কাছাড় কাগজ কলের কর্মচারীরা। প্রায় দুবছর ধরে বেতন না হওয়াতে চরম দুর্ভোগে থাকা কাগজ কল কর্মচারীদের তিন মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এক সরকারি সূত্র অনুযায়ী জানা গেছে, তিন মাসের বেতন বাবদ প্রায় আঠারো কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। শুক্রবার বরাদ্দ অর্থ কাগজ কলটির কলকাতায় থাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছে গেছে। শনিবার হিন্দুস্তান পেপার মিল বা কাছাড় কাগজ কলের কর্মচারীরা তাদের আঠারো মাসের বকেয়া বেতনের মধ্যে মাত্র তিন মাসের বেতন পাবেন। তবু বেতন পাওয়ার খবরটি পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত কর্মচারীরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়াতে চরম দুর্ভোগের দিন যাপন করছেন। নানান সময় ধর্না, আন্দোলন ইত্যাদি করেছেন তারা, একসময় আত্মহত্যারও হুমকি দিয়েছিলেন।
সরকারের তরফে অনেকসময় অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আক্ষরিক অর্থে তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য কোনও বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় নমামি বরাকে এসে স্বয়ং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সামনে কথা দিয়েছিলেন যে কাগজ কলের সমস্যা তারা দূর করবেন। সেটি ছিল গতবছরের নভেম্বর মাসের কথা। তার প্রায় ছয় মাস পরেও সেভাবে কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারকে।
সরকারী সূত্র মতে এটাও জানা গেছে কেন্দ্র সরকারকে এক চিঠি লিখে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সম্প্রতি কাছাড় কাগজ কল নিয়ে তারা কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা জানতে চান। হয়ত এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই তিন মাসের বেতনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কাগজ কলটিতে বহুদিন ধরেই উৎপাদন বন্ধ। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক টানাপোড়েনের শিকার এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি এখন প্রায় বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থায় এসে পৌঁছে গেছে। অথচ একসময় এটিকে সারা দেশের অন্যতম সেরা কাগজ কল হিসাবে গণ্য করা হতো। এখানে অত্যন্ত উন্নত মানের কাগজ উৎপাদন করা হতো এবং বানিজ্যিক দিক দিয়ে এর মূল্য অনেক বেশী ছিল। তবে এখন উৎপাদন না হওয়াতে মেশিন গুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। কেন্দ্র সরকারের তরফে একবার এটিকে ‘পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ’ করে চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি
তিন মাসের বকেয়া বেতন চুকিয়ে দেওয়া অবশ্যই একটি ভালো পদক্ষেপ তবে সমস্যাটির স্থায়ী সমাধান কবে হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যায়।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২৬ ফেব্রুয়ারি গুয়াহাটিতে কাগজ কল শ্রমিক ও কর্মচারী সংস্থার প্রতিনিধি এবং কাগজ কল কর্তৃপক্ষের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । বৈঠক শেষে কাগজ কলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শশিকান্ত জৈন ঘোষণা করেন যে মার্চ মাসের ভেতরেই ৩ মাসের বেতন পাচ্ছেন নগাও ও কাছাড় কাগজ কলের কর্মচারীরা। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বাকি বেতন তিন মাস পর পর প্রদান করা হবে।
Comments are closed.