পারুল রানী শর্মা স্মৃতি ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন সোনাই, শেষ রক্ষা হল না ইটখোলা স্পোর্টিংয়ের
ডিএসএ আয়োজিত পারুল রানী শর্মা স্মৃতি দ্বিতীয় ডিভিশন ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হলো সোনাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। সোমবার এসএম দেব স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতার ফাইনালে সোনাই ৬ উইকেটে হারায় ইটখোলা স্পোর্টিং কে।
এদিন টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সোনাই। ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে ৮ উইকেটে ১৫৯ রানের স্কোর খাড়া করে ইটখোলা। তাদের মাজীদ লস্কর (৩৬) ও অমিত রবিদাস (৩৬) ভালো ব্যাটিং করেন। এছাড়া মিনহাজ আহমেদ ১৬, রাহুল সিং ১৫ ও আলতাফ হোসেন ১৯ রান করেন। অতিরিক্ত ২৩। দুটি করে উইকেট নেন আজাদ লস্কর ও সাহার আলম বড়ভুইয়া।
ফাইনালের মত ম্যাচে এই স্কোর তাড়া করতে নেমে প্রচণ্ড চাপেছিল সোনাই। এর মধ্যে তারা শুরুতেই উইকেট হারিয়ে ফেলে। এমন পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরেন ডানহাতি ওপেনার অরূপ দে। গোটা টুর্নামেন্টেই ধারাবাহিক পারফর্ম করেছেন তিনি। আর ফাইনালে তো নিজের সেরাটা নিংড়ে দিলেন। ৫৩ বলে অপরাজিত ৮০ রানের ম্যাচ উইনিং নক খেলেন তিনি। তার এই ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও দুটি ছয়ের মার। মূলত অরূপের দৌলতেই ১৭.৫ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সোনাই। বি ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন হবার সুবাদে আগামী বছর প্রথম ডিভিশনে খেলার ছাড়পত্র আদায় করল তারা। অথচ টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এক রানে হেরে গিয়েছিল সোনাই। দুধ পাতিলের বিরুদ্ধে শেষ তিন বলে দু রান করতে ব্যর্থ হয়েছিল তারা। কিন্তু এরপরই ঘুরে দাঁড়িয়ে খেতাব করে তুলল সোনাই । উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, গতবছর তৃতীয় ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এবার দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলতে নেমেছিল সোনাই। ফলে টানা দু’বছর শিলচরের ক্রিকেটে খেতাব জিতল তারা।
ফাইনালে সোনাইয়ের পক্ষে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন শাহেদ চৌধুরী ২৮, বিভু দাস ১০ ও খুশ দাস ১৭। অতিরিক্ত থেকে আসে ২৫। আসলে ফাইনালে বড় সড় একটা স্কোর করলেও ফিল্ডিং ও বোলিং মোটেও ভালো করতে পারেনি ইটখোলা। এজন্যই তাদের রানারআপ ট্রফি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে ট্রফিসহ আট হাজার টাকা পেল সোনাই। রানারআপ ইটখোলা পেল ট্রফি সহ মোট পাঁচ হাজার টাকা। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন সোনাই দলের অরূপ দে। টুর্নামেন্ট সেরা এবং প্রতিযোগিতার সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কারও পেয়েছেন অরুপ। গোটা টুর্ণামেন্টে মোট ২৫৮ রান করেন তিনি। সেরা বোলার এর পুরস্কার পেয়েছেন মধ্যশহর এস এসের প্রিয়াংশু বর্মন। টুর্ণামেন্টে ৯ উইকেট শিকার করেন তিনি। টুর্নামেন্টের দুই হ্যাটট্রিক শিকারি ক্লাসমেটস ইউনিয়নের রিপু মজুমদার ও দুধ পাতিল ক্লাবের মৃণাল কান্তি নাথ কেও পুরস্কৃত করা হয়।
উল্লেখ্য, চব্বিশটি দলকে নিয়ে গত ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল বি ডিভিশন ক্রিকেট
এদিন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক সুমিত সাত্তায়ন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড়, সহ-সভাপতি সুজয় দত্ত রায়, স্পন্সর এর পক্ষ থেকে চন্দন শর্মা ও স্মিথ শর্মা, প্রাক্তন রনজি তারকা জাবেদ খান, ইটখোলা স্পোর্টিংয়ের সভাপতি অনুপ কুমার সিং, সোনাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদর উদ্দিন মজুমদার এবং রাজ্য দলের প্রাক্তন খেলোয়াড় অভিষেক হোড়। গোটা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ডি এস এ সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং।
এদিন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে স্পনসর চন্দন শর্মা সংস্থার পিচ কিউরেটর রাম বেহরা কে নগদ এক হাজার টাকা ও ট্রাকসুট দিয়ে বিশেষ সম্মান জানান।
Comments are closed.