কেন যীশু পুজো করলেন? হাইলাকান্দি রামকৃষ্ণ সেবা সমিতির কাছে জবাব চাইল বজরং দল
রামকৃষ্ণ মিশনের একটি প্রথা রয়েছে তারা ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যেবেলা যিশুখ্রিস্টের পুজো করেন। ভক্তদের বিশ্বাস অনুযায়ী ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ যীশু খ্রীষ্ট এবং বুদ্ধদেবের দর্শন পেয়েছিলেন। তাই যেভাবে বুদ্ধ পূর্ণিমায় বুদ্ধদেবের জন্মদিন উদযাপন হয় ঠিক সেভাবেই ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যাবেলা বড়দিনের একদিন আগে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন পালন করেন রামকৃষ্ণ মিশনের ভক্তরা। শুধুমাত্র শিলচর বা করিমগঞ্জ নয়, কেন্দ্রীয়ভাবে বেলুড়মঠে ও অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয়। তবে অন্যান্য বছর অনুষ্ঠানটি নিয়ে এত মাথা ব্যাথা থাকে না কোনও সংগঠনের। সম্প্রতি শিলং রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ কালচারাল সেন্টারে তালা ঝোলানোর ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল বরাক উপত্যকা। বজরং দল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিল কোনও হিন্দু বড়দিনে গির্জায় যেতে পারবেনা। তবে রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে যীশু পুজো করায় হাইলাকান্দিতে প্রতিবাদ জানিয়েছে বজরং দল।
শুক্রবার দুপুরে বজরং দলের সদস্যরা হাইলাকান্দির রামকৃষ্ণ সেবা সমিতির কার্যালয়ে উপস্থিত হন। তারা জানতে চান কেন রামকৃষ্ণ মিশনে যিশুখ্রিস্টের পূজা হয়েছে? তাদের যুক্তি হচ্ছে, মেঘালয়ে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা লাগাতার নিরীহ হিন্দুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এক সময় তারা রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ কালচারাল সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল। এর মাধ্যমে বারবার একটাই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, মেঘালয় ক্রিস্টান দের রাজ্য, সেখানে হিন্দুরা স্বচ্ছন্দে নিজেদের পূজো-আর্চা করতে পারবে না। তবে ভারতবর্ষ যদি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হয় তাহলে এই দেশের একটা রাজ্য কিভাবে ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে!
বজরং দলের হাইলাকান্দি শাখার পক্ষ থেকে বিক্রমজীত ভট্টাচার্য্য এব্যাপারে বলেন, “আমরা শিলংয়ের ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়েই যীশু পূজার প্রতিবাদ করেছি। তারা আমাদের কথা শুনেছেন এবং আগামীতে এব্যাপারে ভাববেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা শুধু একটা বার্তা দিতে চাইছি যে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করলে আমরা চুপ করে থাকতে পারছি না।”
হাইলাকান্দি রামকৃষ্ণ সেবা সমিতির পক্ষ থেকে প্রেমাংশু পাল জানিয়েছেন, তারা বেলুড় মঠের নিয়ম মেনেই প্রতিবছর যিশু পূজো করেন। বজরং দলের পক্ষ থেকে তাদের কাছে প্রশ্ন করলে তারা সেটাই উত্তর দিয়েছেন। তারা জানতে চাইলে রামকৃষ্ণ মিশনের ইতিহাসের উল্লেখ করে তাদের বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। যদি বুদ্ধ পূর্ণিমা পালন করা অন্যায় না হয় তাহলে যীশু পুজো অন্যায় হতে পারে না, এমনটাই বয়ান রামকৃষ্ণ সেবা সমিতির সদস্যদের।
উল্লেখ্য শিলচর শহরে এই প্রথমবার বড়দিনের সন্ধ্যেবেলা প্রত্যেকটি গির্জার দরজা বন্ধ ছিল। বজরং দলের হুমকি কথা মাথায় রেখে গির্জার ভেতরের পুলিশ এবং সিআরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
Comments are closed.