ফের একবার রানার আপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে জেলার তারকা ক্রিকেটার তথা টাউন ক্লাবের অধিনায়ক শমীক দাসকে। গতবছরও সুপার ডিভিশনে রানার আপ দলের সদস্য ছিলেন তিনি। অথচ রবিবার ফাইনালে তারাই ছিলেন হট ফেবারিট। কিন্তু দুর্বল ব্যাটিংয়ের পর জঘন্য ফিল্ডিং করে ডুবল তারা। উল্টোদিকে, ফাইনালে দুরস্ত ক্রিকেট উপহার দিয়ে নারায়ণ পাল স্মৃতি সুপার ডিভিশন প্রাইজমানি ক্রিকেটে খেতাব ধরে রাখল ইউনাইটেড ক্লাব। এনিয়ে টানা দুবছর চ্যাম্পিয়ন হল তারা। খেতাবি লড়াইয়ে তিন উইকেটের জয় দিয়ে বাজিমাত করলেন মশারব হুসেন লস্কর অ্যান্ড কোম্পানি।
রবিবার সতীন্দ্র মােহন দেব স্টেডিয়ামে মেগা ফাইনালে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হল টাউন ক্লাব। ব্যাটিংয়ে একের পর এক ব্যাটসম্যান উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন। ইয়াসির আলি (৫১) ও শমীক দাসের (৩৮) ছাড়া উল্লেখ করার কিছু নেই। শুভম মন্ডল (২৬) ও মুজিবুর আলি (১৭) আশা জাগিয়েও বড় স্কোর গড়তে পারলেন না। অথচ ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাবার পর দলের টপঅর্ডারের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন সমর্থকরা। কিন্তু বিপক্ষের স্পিনারের সামনে অধিকাংশই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিলেন।
লােয়ার মিডল অর্ডারে কেউই অধিনায়ক শমীক দাসের সঙ্গ দিতে পারেননি। যখনই শমীক চতুর্থ গিয়ারে যাবার চেষ্টা করেছেন, অন্যপ্রান্তে কেউ না কেউ নিজের উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন। ফলে একপ্রান্তে কুম্ভের মতাে লড়াই করে যান শমীক। তিনি শেষ ছয় ওভারে যতসম্ভব স্ট্রাইক নিজের কাছে রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বাকিরা অনর্থক বড় শট নিতে গিয়ে নিজেদের উইকেট উপহার দিয়ে আসেন। অথচ দরকার ছিল সিঙ্গল নিয়ে অধিনায়ককে স্ট্রাইক ফিরিয়ে দেওয়া। অবশেষে ইনিংসের শেষ বলে দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন শমীক (৩৮)। আর দল থেমে যায় ১৬২ রানে।
ফাইনালের মতো ম্যাচে এই রান খারাপ নয়। এরমধ্যে আবার টাউন ক্লাবের বােলিং লাইনআপটাও দারুণ। শুরুতেই ওপেনার প্রদীপ সরকারকে (৬) ফিরিয়ে দেন দিবাকর জহরি। তবে রাজু দাস বড় ম্যাচে নিজের সেরাটা নিংড়ে দিলেন। খেললেন ঝকঝকে একটা অর্ধশতরানের ইনিংস। তবে তাকে তাঁর এই ইনিংসটার পরও কিন্তু লড়াইয়ে ভালভাবেই টিকে ছিল টাউন। সুকান্ত দে (১০) ও প্রসেনজিত সরকার (১০) বিশেষ কিছু করতে পারেননি। এরপর রাজুকেও সাজঘরে ফেরান শমীক। বিষাক্ত ইনসুইংগারে। ম্যাচ তখন ৫০-৫০। এমন পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরেন বহুযুদ্ধের ঘােড়া মশারব। আজ একটু উপরে ব্যাট করতে নামলেন। যা ম্যাচে বিরাট প্রভাব ফেলেছে। কারণ মশারব আসার পরই চাপে পড়ে যান বিপেক্ষর ফিল্ডাররা। তবে মশারবকে ফিরিয়ে দেবার একাধিক সুযােগ পেয়েছিল টাউন ক্লাব। তবে বাজে ফিল্ডিংয়ে সেটা আর সম্ভব হয়নি। অবশেষে শান্তনুকে ক্রস খেলতে গিয়ে ফিরে যান মশারব (১৫)। চাপের মধ্যে ভীষণ ভাইটাল একটা ইনিংস খেলেন অনুভব দাস (২১)। তবে দিনের শেষে দলের সবথেকে মহামূল্যবান ইনিংসটি খেলেন অভিক লালা। তার অপরাজিত ১১ রানের ইনিংসটিই দলের জয় নিশ্চিত করে। দু বল বাকি থাকতে সাত উইকেট হারিয়ে (১৬৫) জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় ইউনাইটেড।
চ্যাম্পিয়ন হবার সুবাদে ট্রফি সহ ত্রিশ হাজার টাকা পেল ইউনাইটেড। আর রানার আপ টাউন ক্লাব পেল ট্রফি সহ কুড়ি হাজার টাকা। টুর্নামেন্ট সেরা বােলার নির্বাচিত হন ইউনাইটেড ক্লাবের ফজলুর রহমান। সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছেন টাউন ক্লারেব ইয়াসির আলি। সেরা ফিল্ডার ইন্ডিয়া ক্লারেব রুদ্রজিত ডেকা। ফাইনালের সেরা খেলােয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন রাজু দাস।
Comments are closed.