ছুটি নিয়েও শান্তি নেই এন.আর.সি কর্মচারীর! : অসুস্থতা যাচাইয়ে বাড়ি থেকে উঠিয়ে আনা হল এম্বুলেন্স ডেকে
রাষ্ট্রীয় নাগরিকপঞ্জি নবায়নের কাজ থেকে অসুস্থতা দেখিয়ে অব্যাহতি, ছুটি চেয়ে আবেদনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় শেষ পর্যন্ত মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করল হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, আগামী ত্রিশ জুনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে এন.আর.সির চূড়ান্ত খসড়া। ফলে জোরকদমে চলছে বংশবৃক্ষ থেকে শুরু করে বিবাহিত মহিলাদের পঞ্চায়েত নথি পরীক্ষা,ভেরিফিকেশনের কাজ।এহেন পরিস্থিতিতে এন.আর.সির কাজে নিয়োজিত একাংশ সরকারি কর্মচারী অসুস্থতা সহ নানা অজুহাত দেখিয়ে ছুটি চাওয়ায় এন.আর.সির কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।যার ফলে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য হাইলাকান্দি এস.কে রায় সিভিল হাসপাতালের অধীক্ষক ডা: সুদীপ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে দিলেন হাইলাকান্দির জেলা উপায়ুক্ত আদিল খান।এদিকে অসুস্থতার কথা জানিয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়ে হাইলাকান্দি বিজ্ঞান মন্দিরে থাকা স্পেশাল ভেরিফিকেশন সেন্টারের দুই নম্বর কক্ষে এস ভি ও বংকেশ চন্দ বিগত তিন দিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন।আর এখবর জানতে পেরে মঙ্গলবার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন ডিসি আদিল খান। ডিসির নির্দেশে এদিন হাইলাকান্দির চক্র আধিকারিক ত্রিদিব রায়, এন. আর.সির ডিপিএস সুমিত প্রসাদ দাস, স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিক্যাল টিমের ডা: সুদীপ চক্রবর্তী এম্বুলেন্স নিয়ে এন. আর.সির স্পেশাল ভেরিফিকেশনের দায়িত্বে থাকা কর্মী বংকেশ চন্দের নয় নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িতে পৌঁছান।অসুস্থতা যাচাই করতে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে হাইলাকান্দি এস. কে রায় সিভিল হাসপাতালের বেডে ভর্তি করানো হয়।বর্তমানে হাসপাতালের মেইল ওয়ার্ডের বেডে রেখে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। মেডিক্যাল বোর্ডের পরীক্ষার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় নাগরিকপঞ্জির কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসন জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বিবাহিত মহিলাদের জন্য পঞ্চায়েতের নথি পরীক্ষা পর্বে কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে সোমবার হাইলাকান্দি রাজস্ব চক্র ও লালা রাজস্ব চক্রের দু’টি কেন্দ্রে কর্তব্যরত দুই জিপি সচিবকে এদিন রীতিমত সতর্ক করে দেন দুই ম্যাজিস্ট্রেট যথাক্রমে ত্রিদিব রায় ও মধুমিতা নাথ। উল্লেখ্য, সমগ্র রাজ্যের সঙ্গে দুই এপ্রিল, সোমবার থেকে হাইলাকান্দি জেলাতেও বিবাহিত মহিলাদের পঞ্চায়েত নথির ভেরিফিকেশন পর্ব শুরু হয়েছে। জেলার সাতান্নটি কেন্দ্রে এই নথি পরীক্ষা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
হয়তোবা কিছু কর্মচারী ঠিকই কর্তব্যে গাফিলতি করছেন কিন্তু তার মানে এইটা নয় যে সবাইকে সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ইলেকশন ডিউটি পালন করাটা যেমন বাধ্যতামূলক থাকে এন.আর.সির কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও ঠিক যেন তেমনটাই। কর্তৃপক্ষকে মানবিক দৃষ্টি দিয়ে কর্মচারীদের কল্যাণের কথাও ভাবতে হবে যাতে করে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়। এন.আর.সি নিয়ে সাধারণ মানুষ যেমন বিভ্রান্তিতে রয়েছেন একইভাবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মচারীরাও আতংকে রয়েছেন। তাদেরকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ এনে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেওয়া হতে পারে বলে তারা ভয় পাচ্ছেন।
তবে বংকেশ চন্দের এই ঘটনার পর অসুস্থতার কারণ দেখিয়েও ছুটি নিতে সবাই অবশ্যই বার কয়েক ভাববেন।
Comments are closed.