শিলচরে ছিনতাইবাজের দলনেতা জলপাইগুড়ির বরুণ সিং, বাইক থাকে মেডিক্যালের পার্কিংয়ে, জানালো পুলিশ
শেষমেষ জনগণের সহায়তাই কাজে এল, পাঞ্জাব ব্যাঙ্কে ধৃত রবীন্দর সিংয়ের সূত্রেই খুঁজে পাওয়া গেল ছিনতাইবাজের ঠিকানা। গত সোমবার দুপুরে তারাপুর এলাকায় এক ৮০ বছরের ব্যক্তির তিন লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতিরা। সেদিন ঠিক একই সময়ে দেশবন্ধু রোডে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে বেহুশ করার স্প্রে ছিটিয়ে আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিল এক দুষ্কৃতি। তবে সেখানে উপস্থিত সাধারণ মানুষের বিচক্ষণতা এবং সাধারণ পোশাকে থাকা পুলিশের সহায়তায় দুষ্কৃতিকে আটক করা সম্ভব হয়। আটক ব্যক্তির নাম রবীন্দর সিং, প্রথমে সে জানিয়েছিল তার বাড়ি বিহারে, কিন্তু পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে অন্য তথ্য। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে।
নিউ জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ি এলাকায় একটি গ্রামে তার বাড়ি। এলাকার অনেকেই এসব কাজে লিপ্ত এবং তারা দল বেঁধে চলে এসেছে। দলের নেতা হচ্ছে বরুন সিং নামের এক ব্যক্তি। সে এলাকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং তাদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যায়। এলাকায় এসব কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো পরিকল্পনা বানায় এবং একের পর এক ছিনতাই চালায়। তারা বিহার থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে আসে, বিভিন্ন নেমপ্লেট বানায়, সেগুলো ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করে। মোটরসাইকেল শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পার্কিংয়ে রেখে দেওয়া হয়। কাজের সময় সেটা নিয়ে যাওয়া হয় পরে আবার পার্কিংয়েই থাকে দুষ্কৃতিদের মোটরসাইকেল।
রাঙ্গিরখাড়ি থানার ইনচার্জ প্রণব কুমার ডেকা জানিয়েছেন, মেহেরপুর সংলগ্ন উত্তর কৃষ্ণপুরের কাবিউরা এলাকায় এক বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে পুরো কাজটি চালাত দুষ্কৃতিরা। যে বাড়িতে তারা থাকতো সেখানে তল্লাশি চালানো হয়েছে, তবে ছিনতাই হওয়া টাকা সেখানে উদ্ধার হয়নি। এসব কাজে বাড়ির মালিকের সহযোগিতা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। মালিক স্বীকার করেন ধৃত দুষ্কৃতি সহ আরো তিনজন প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তার ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। তারা ব্যবসায়ী পরিচয়ে ঘর ভাড়া নিয়েছিল। তবে সোমবার থেকে কেউ আর ঘরে আসেনি। পুলিশের অনুমান রবি সিং পরিচয় দেওয়া দুষ্কৃতীটি ধরা পরার পরই পালিয়ে যায় তার সঙ্গীরা।
জেলার ডিএসপি হেডকোয়ার্টার ভার্গব সঞ্জীবন গোস্বামী জানিয়েছেন, এব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যারা এসেছে তাদের বাড়ির ঠিকানা বের করে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা মনে করছি এই সাফল্যের পর শহরের ছিনতাইয়ের ঘটনায় লাগাম আসবে। অন্তত এখন দুষ্কৃতিরা প্রকাশ্যে এসব কাজ করতে পারবেনা। আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে আগামীতে বাকিদের আটক করা সম্ভব হবে।”
Comments are closed.