Also read in

দুইমাসের মাথায় আটক শিশুকন্যার যৌননিগ্রহে অভিযুক্ত মৌলভী সামসুদ্দিন বড়ভূঁইয়া

৬ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য মৌলভীর কাছে পাঠিয়েছিলেন এক মহিলা, সেখানে শিশুটির যৌননিগ্রহের চেষ্টা করেন মৌলভী। সমাজের ভয়ে ভীত না হয়ে নিজের কন্যার পাশে দাঁড়ান মহিলাটি এবং সোজা মৌলভীর নামে মামলা করেন। এরপর প্রায় দুইমাস ধরে গা-ঢাকা দিয়েছিল সামসুদ্দিন বড়ভূঁইয়া নামের মৌলভী। তার বাড়ি মেহেরপুরের পাঁচগোরি লেনে, তার বাড়ির দিকে নজর রেখেছিলো পুলিশ, রবিবার রাতে বাড়ি ফেরে সে এবং সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। যেহেতু শিশু নির্যাতনের মামলা, সোমবারই তাকে আদালতে পেশ করা হয়।

গত বছর ৬ ডিসেম্বর শিলচর সদর থানায় মামলা করেছেন ছয়বছর বয়সের শিশুর মা। ধর্মীয় শিক্ষাগুরু সামসুদ্দিন বড়ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৬ বছর ৭ মাস বয়সের ছোট্ট মেয়েটির শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করেছেন। এরপর লোকটি পালিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সরাসরি পুলিশের কাছে মামলা করেন মহিলা। এর পিছনে উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিক্ষাগুরুর নাম করে যাতে আগামীতে কোনও শিশুর সঙ্গে এমনটা করতে না পারে লোকটি। তাই থানায় মামলা করেন, পাশাপাশি এলাকায় প্রত্যেক ব্যক্তিকে এব্যাপারে খবর দেন।

তিনি ফোনে আমাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, “লোকটি আমার ভাইয়ের বাড়িতে পড়াতে আসত, তার সন্তানদের ইসলামের শিক্ষা দিত। আমার ছোট্ট মেয়ে এখন কেজি-টু-তে পড়াশোনা করে। আমি ভেবেছিলাম তাকেও কিছুটা ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন, তাই ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করি। ভাই মৌলভীর সঙ্গে কথা বলে এবং আমাকে জানায় যে মেয়েকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তার কথা মতই মেয়েকে নিয়ে পড়াতে দিই এবং পাশের ঘরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসে গল্প করতে থাকি। আমার ভাই আমাদের জন্য রান্নাঘরে চা বানাতে গেছিল, হঠাৎ আমার মেয়ে চিৎকার করে পড়ার ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। এতে আমরা প্রথমে আতঙ্কিত হই এবং মেয়েকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করি। তাকে শান্ত করে পুরো ব্যাপারটি জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, মৌলভী তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করতে চেয়েছিল, সে বাধা দিলে মৌলভী জোর করে। ঘটনাটি বুঝে নিতে আমাদের বেশি সময় লাগেনি, সঙ্গে সঙ্গে মৌলভীকে আটকাতে যাই। তবে ততক্ষনে সে পালিয়ে গেছে, তার ফোন সুইচ অফ করে নিয়েছে, এমনকি তার পরিবারের লোকেরাও তাকে খুঁজে বের করতে পারেননি।”

তিনি আরও বলেন, “মৌলভীরা আমাদের ধর্মের শিক্ষাগুরু, তাদের কাছে শিশুদের পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকাই আমাদের কাজ। তবে যুবকটি মৌলভী পদবীকে অপমান করেছে। তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে এব্যাপারে সরব হই। পরিবারের লোকেরা বলেন, এধরনের কাজের জন্য ইসলামের নিজস্ব শাস্তির বিধান রয়েছে, তবে সেই শাস্তির বিধান অত্যন্ত কঠোর এবং ভারতবর্ষে এটা হয় না। তাই আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি। আগামীতে লোকটি যাতে এমন কাজ আর করতে না পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করতে চাই। আমরা আশা করছি পুলিশের পক্ষ থেকে এব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

Comments are closed.