বরাক উপত্যকা থেকে রাসায়নিক সার অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে মিজোরামে, কঠোর পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন
বরাক উপত্যকা হয়ে মিজোরামে বিভিন্ন নিষিদ্ধ সামগ্রীর অবৈধ পাচার নতুন ব্যাপার নয়। তবে এবার রাসায়নিক সারও অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে এবং একে কেন্দ্র করে রীতিমতো একটা পাচার চক্র গড়ে উঠেছে বরাকের বিভিন্ন জায়গায়, এমনটাই জানালেন কাছাড়ের জেলা শাসক ডাঃ এস লক্ষ্মণণ।
শুক্রবার তার কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তিনি জানান, সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় মিজোরামগামী গাড়ি থেকে বিরাট আকারের অবৈধভাবে পাচার হওয়া রাসায়নিক সার উদ্ধার করেছে কাছাড় পুলিশ। তদন্ত করে প্রমাণও পাওয়া গেছে যে এসব সার অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল। ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি আরও গভীরে তদন্ত চালানো হয় এবং এতে উঠে আসে আরও কিছু তথ্য। শিলচর সহ বরাকের বিভিন্ন এলাকায় ইউরিয়া জাতীয় রাসায়নিক সার অবৈধভাবে জমা রাখে কিছু দুষ্ট চক্র। তারা মিজোরামে এসব সার বেশি দামে বিক্রির জন্য পাঠায় এবং এতে বরাক উপত্যকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
ইউরিয়া মূলত নামরূপের ব্ৰহ্মপুত্ৰ ভ্যালি ফারটিলাইজার কর্পোরেশন থেকে বরাক উপত্যকা এবং মিজোরামের জন্য আসে। বছরে প্রায় তিরিশ হাজার টন ইউরিয়া কৃষিকাজের জন্য বরাকের তিন জেলায় পাঠানো হয় এবং এসব সরকারি মূল্যেই কৃষকদের দেওয়া হয়।
কোম্পানি থেকে প্রতি কেজি ইউরিয়া ২২ টাকায় দেওয়া হয় যা সরকারি ভর্তুকির পর ৬ টাকায় কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু দুষ্ট চক্র এই অঞ্চলের জন্য বরাদ্দ ইউরিয়া মিজোরামে পাচার করে দেয়।
এসব আটকাতে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে জেলা প্রশাসন। নামরূপের ব্ৰহ্মপুত্ৰ ভ্যালি ফারটিলাইজার কর্পোরেশন থেকে ইউরিয়া এসে শালচাপড়ার রেলের মজুদ ভাণ্ডারে জমা হয়। লাইসেন্স থাকা সরবরাহকারীরাই সেখান থেকে সার সংগ্রহ করতে পারেন। তারা রিটেলারদের এসব দেন এবং রিটেলারদের কাছ থেকে কৃষকরা সংগ্রহ করেন।
সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয় যে এখন থেকে কৃষকদের পয়েন্ট অব সেলস্ বা পস্ মেশিনের মাধ্যমে ইউরিয়া সার ক্রয় করতে হবে । সারের অবৈধ ব্যবসা প্রতিহত করতে আসাম সরকার সব অনুমোদিত সার বিক্রির ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে এই মেশিন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দিয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে ভবিষ্যতে অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকলে লাইসেন্স রদ করা হবে ।
এদিকে স্যারের অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে শিলচর আশ্রম রোডের একটি গুদামকে গতকাল সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং গত দু মাসে ছয়টি ট্রাক আটক করা হয়েছে।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন, ব্ৰহ্মপুত্ৰ ভ্যালি ফারটিলাইসার কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে অসীম কুমার দত্ত এবং অন্যান্যরা অংশ নেন।
Comments are closed.