এবার হ্যাক হলো গুরুচরণ কলেজের ওয়েবসাইট, অসমীয়া-বাঙালি বিদ্বেষ নিয়ে আজব বার্তা হ্যাকারদের
সম্প্রতি রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজের স্টাডি অ্যাপ হ্যাক হয়েছিল এবং এতে লেখা হয়েছিল ‘বাংলাদেশের খান সাইবার আর্মি’ কাজটি করেছে। এবার বরাক উপত্যকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এবং প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুচরণ কলেজের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করা হলো। রবিবার দুপুরে কিছু সময়ের জন্য ওয়েবসাইট হ্যাকারদের অধীনে ছিল, যদিও পরবর্তীতে কলেজের সাইবার এক্সপার্টরা সেটি মুক্ত করতে সমর্থ হন।
তবে ওয়েবসাইট হ্যাক করে অসমীয়া-বাঙালি প্রসঙ্গ টেনে এক অদ্ভুত বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে দুষ্কৃতীরা। তারা লিখেছে, “অসমীয়া ১৩৩৭ এটা হ্যাক করেছে। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নই, শুধুই অসমীয়া মানুষ। সাধারণ অসমীয়া মানুষ আমরা… শিলচর শহরের কিছু মানুষ অসমীয়াদের নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করছেন। আমরা তাদের বলে দিতে চাই একটা কথা মাথায় রাখবেন, যেহেতু আসামে বাস করছেন আপনারা অসমীয়া। আপনাদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে অসমীয়া। নিজের পেরেন্টেজ নিয়ে লড়াই করো, এটা তোমাদের অধিকার। তবে এখানে বরাক-ব্রহ্মপুত্র দোহাই দিয়ে লাভ নেই আমরা প্রত্যেকে ভাই-বোন। ভালো থেকো, আমরা আবার আসবো।”
অবশ্যই এটি উস্কানিমূলক মন্তব্যের আওতায় পড়ে এবং প্রশাসনের সাইবার বিভাগের তত্ত্বাবধানে আসার মত একটি ঘটনা। এব্যাপারে পুলিশ সুপার বিএল মিনার বয়ান, “বিষয়টি এখনও পুলিশের কাছে আসেনি, তবে আমরা চোখ রাখছি। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের জানালে সাইবার বিভাগ এব্যাপারে পর্যাপ্ত তদন্ত করবে।”
গুরুচরণ কলেজের অধ্যক্ষ বিভাস দেব জানিয়েছেন, তাদের সাইবার এক্সপার্ট দল ইতিমধ্যে ওয়েবসাইট হ্যাকারদের কবল থেকে মুক্ত করতে সমর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা খবর পাওয়া মাত্র নিজেদের বিশেষজ্ঞ দলকে ডেকে পাঠাই এবং তারা এটি মুক্ত করতে সমর্থ হয়। প্রাথমিকভাবে দেখা হচ্ছে ওয়েবসাইটে ঢুকে কোন ধরনের তথ্য নষ্ট করা হয়েছে কিনা। এরপর প্রয়োজন হলে পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে খবর দেওয়া হবে। তবে কলেজ পড়ুয়াদের বলতে চাই, আপনারা আতঙ্কিত হবেন না, আমাদের দল অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং পটু। তারা ওয়েবসাইটটি আরো শক্তপোক্ত করে তুলবে যাতে ভবিষ্যতে হ্যাকাররা এটি দখল করতে না পারে।”
সাইবার বিশেষজ্ঞ রাজিব বর্মার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পনেরো বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কোনোভাবে সুরক্ষা ব্যবস্থায় খামতি রয়ে গেছিল, ফলে ওয়েবসাইটটি হ্যাক হয়েছে। হ্যাকারদের বার্তাটি যেখান থেকে আসছিল সেটা কলেজের আসল ইউআরএল নয়। অর্থাৎ সার্ভারের রুফ লোকেশন হাতিয়ে নিতে সমর্থ হয়েছে হ্যাকাররা। কলেজ কর্তৃপক্ষকে আরও একটু সাবধান হওয়া উচিত।”
Comments are closed.