রাঙ্গিরখাড়িতে নিয়ন্ত্রণ হারানো ওয়াগনারের ধাক্কায় গুরুতর আহত দুই, আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেডিক্যালে
শুক্রবার সকালে শালচাপরা এলাকায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে রাঙ্গিরখাড়ি এলাকায় আরো একটি দুর্ঘটনা ঘটে। নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি ওয়াগনার গাড়ি রাঙ্গিরখাড়িতে দুই পথচারীকে ধাক্কা দিয়ে গুরুতরভাবে আহত করেছে। তাদের দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা। এরা হলেন হাইলাকান্দি রোডের রূপেন্দ্র দাস এবং কাঁঠাল ভজন্তিপুর তৃতীয় খণ্ডের বাসিন্দা রাণীবালা দাস। কেউ কেউ বলছেন গাড়ির চালকের স্নায়ুজনিত রোগ ছিল এবং তাতেই তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিলেন। তবে এ ব্যাপারে কোন স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। চালক আপাতত পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
ঘুংগুর আউটপোষ্টের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকাবাসীর বয়ান অনুযায়ী এদিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ রাঙ্গিরখাড়ি পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। হঠাৎ করেই এক পথচারী ব্যাক্তি এবং রাস্তার পাশের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলাকে ধাক্কা মারে গাড়িটি। তাদের গুরুতরভাবে আহত করে আরেকটি অলটো গাড়িতে ধাক্কা মারে ওয়াগনারটি। এতে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিন্তু চালক বেঁচে যান। এলাকাবাসীরা তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা যাত্রীকে আটক করে রাখেন এবং পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়।
ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন আশা-কর্মী রাণীবালা দাস, সঙ্গে তার ছেলে মিঠন দাস ছিল, সে এলাকাবাসীর সহায়তায় মা-কে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহত মহিলার স্বামী অশ্বিনী দাস জানিয়েছেন, সোনাই প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে একটি প্রশিক্ষণ ছিল এবং সেখানে অংশ নিতেই ঘর থেকে বেরিয়ে ছিলেন রাণীবালা দাস। তিনি মাথায় এবং পায়ে গুরুতর ভাবে আঘাত পেয়েছেন, কান দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়েছে এবং হাঁটুর নিচের অংশ ভেঙে গেছে। অচেতন অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
ঘটনায় আহত হওয়া অপর ব্যক্তি রুপেন্দ্র দাসের বয়স ৬৫, তিনি হাইলাকান্দি রোডের বাসিন্দা। কোনও একটা কাজে রাঙ্গিরখাড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন, রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় গাড়িটি তাকে আঘাত করে। তিনিও শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অবস্থা সঙ্কটজনক।
এদিকে শুক্রবার সকালে শালচাপরা এলাকায় ট্রাভেলার এবং অটোর মুখোমুখি ধাক্কায় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মৃত ব্যক্তিরা হলেন মীরা রানী দাস এবং অসিত চন্দ্র দাস। মীরা রানী দাস (৪০) কাটিগড়া শিবনারায়ণ পুরের বাসিন্দা। ছেলে সমরজিত দাসকে নিয়ে অটোতে করে শিলচর আসছিলেন এবং শহরে ঢোকার আগেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। নিহত হওয়া অপর ব্যক্তির নাম অসিত চন্দ্র দাস, তার বাড়ি শালচাপরা এলাকায়। এছাড়া হাইলাকান্দিগামী ট্রাভেলার গাড়িতে থাকা অনেকেই আহত হয়েছেন, এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এর মধ্যে রয়েছে নিহত মহিলার ছেলে সমরজিৎ দাসও। কলকাতার ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ সাহা এবং মনীশ দাগা সহ কয়েকজন হাসপাতালে সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অনেকেই চিকিৎসাধীন তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি, কেননা তারা অচেতন অবস্থায় রয়েছেন। এখনও পরিবারের তরফে যোগাযোগ করা হয়নি ফলে পুলিশের কাছেও তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেই।
Comments are closed.