লায়ন্স ক্লাবের ১৭-তম গণবিবাহে গাঁটছড়া বাঁধলেন কাছাড়ের ছয় যুগল
অন্যান্য বছরের মতো এবারও গণবিবাহ আয়োজন করে লায়ন্স ক্লাব শিলচর সেন্ট্রাল। এবছর গণবিবাহের ১৭-তম সংস্করণ। কাছাড় জেলার ছয় যুগল এবছরের গণবিবাহ উৎসবে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। সম্পূর্ণ বৈদিক নিয়মে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় এবং ক্লাবের সদস্য সহ উপস্থিত অতিথিরা অত্যন্ত খোশমেজাজে বিয়ে উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে এক সময় উপস্থিত হন সাংসদ রাজদীপ রায়ও।
গণবিবাহ কমিটির সদস্যরা জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে এবার অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত করা হয়। অনুষ্ঠানে জনসমাগম অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হয় এবং সামাজিক দূরত্ব সহ অন্যান্য কোভিড প্রটোকল মানা হয়। ছয় যুগলকে এদিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করিয়েছে লায়ন্স ক্লাব, শিলচর সেন্ট্রাল। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ১০ জন সদস্য অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বলা হয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত অতিথি সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়। তবে সম্পূর্ণ বৈদিক নিয়ম মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
তারা বলেন, “পরিস্থিতি যাই হোক, আমাদের সামাজিক কাজের ধারা বন্ধ হবে না, তাই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। যারা এদিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তাদের নানা উপহার সহ বিয়ের দিনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্ল্যাঙ্কেট, মশারি ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের সঙ্গে একমাসের রেশন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে বিবাহ পরবর্তী সময়ে সংসার শুরু করতে অসুবিধে না হয়।”
যারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন তারা হলেন, বিক্রমপুর চা-বাগানের দীপন ভূমিজ এবং সরস্বতী ভূমিজ, লেবুরবন্দের টিংকন দাশ এবং রাজাটিলার ঝুমকি দাস, লেদিয়াছড়া চা-বাগানের রামানুজ কালিন্দী এবং ছোটদুধপাতিলের কুটলি আকুরা, তারাপুর শিববাড়ি রোডের সুপ্রভাত দাস এবং রংপুরের সারদা কুমারী ভোরা, নগর চা বাগানের সান্তনু ওড়াং এবং হাতিছড়া চা বাগানের অগ্নিতা ওড়াং, চেঙকুড়ি চা বাগানের সুজিত কানু এবং চেংদুয়ারের সুজিতা গোয়ালা।
অনুষ্ঠানে লায়ন্স ক্লাব শিলচর সেন্ট্রালের সভাপতি ডাঃ মোহাম্মদ মাসুম, সভাপতি সুমিত দাস, লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান অরিন্দম ভট্টাচার্য, বিবাহ অনুষ্ঠানের কো-চেয়ারম্যান আরএন দত্ত সহ অন্যান্য সদস্যরা অংশ নেন।
তারা জানান প্রায় দুই দশক ধরে শিলচরে গন বিবাহ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনশোর বেশি যুগলকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা হয়েছে এবং তাদের পরবর্তী জীবন উন্নত হয়েছে। তারা বলেন, “অনেক পরিবারের মা-বাবা তাদের সন্তানকে বিয়ের উপযুক্ত হওয়ার পরেও আর্থিক কারণে বিয়ে দিতে পারেন না। লায়ন্স ক্লাব নানান সামাজিক কাজের মধ্যেই কাজটিকেও গুরুত্বপূর্ণ মনে করে, তাই এত বছর ধরে অনুষ্ঠানটি চালিয়ে আসছে। এবছর কোভিড পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও আমরা অনুষ্ঠান আয়োজন করছি এবং আশা করছি ভবিষ্যতেও এই ধারা অক্ষুণ্ন থাকবে।”
Comments are closed.