
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় শিলচরে ১৫ লক্ষ টাকায় ফ্ল্যাটবাড়ি; ভারতীয়তার ছোঁয়া দিতে 'কৃষ্ণ-রাধে-দৈবকী-বাসুদেব' টাওয়ার
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কথা বললে আমাদের মনে আসে গ্রামের সাধারণ পাকা বাড়ির কথা। কিন্তু এবার এই যোজনার অধীনে গড়ে উঠছে ফ্লাটবাড়ি। শিলচর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কাঁঠাল রোড সংলগ্ন বুধুরাইল এলাকায় গড়ে উড়ছে চারটে বিশাল রিসোর্ট। এতে পাঁচতলা বিশিষ্ট ৪টি ব্লকে থাকছে দুই বেডরুমের (২বিএইচকে) ১৯২টি ইউনিটের ৪টি টাওয়ার। ভারতীয়তার ছোঁয়া দিতে প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে বৃন্দাবন অ্যাপার্টমেন্ট। রয়েছে ‘কৃষ্ণ-রাধে-দৈবকী-বাসুদেব’ টাওয়ার। আয়তনের দিক থেকে সর্বোচ্চ ইউনিট-টি হচ্ছে ৮৮১ বর্গফুটের, সবচাইতে কম আয়তনের ফ্ল্যাট-টি হবে ৭০১ বর্গফুট। ১৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হচ্ছে ফ্ল্যাটের মূল্য। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের কাছে ইডব্লুএস সার্টিফিকেট রয়েছে, তারা ২ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকার ছাড় পাবেন।
নির্মান সংস্থা অ্যাডভান্টেজ রিয়েলিটি ফ্ল্যাটটি বানানোর কাজ করছে এবং এতে সহায়তা করেছেন শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়। নির্মাণ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে প্রথম দিনেই একশোর বেশি ফ্ল্যাট বুক করেছেন গ্রাহকরা। অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি ফ্ল্যাট ইতিমধ্যে বুক হয়ে গেছে এবং প্রকল্পটি সফল হচ্ছে বলেই ধরে নিচ্ছেন তারা। এমনকি এই প্রকল্পের অধীনে আরো ফ্ল্যাট গড়ে তোলার পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছেন ইতিমধ্যেই।
রবিবার সকালে ভূমিপূজন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সূচনা হয় এই সুবিশাল কর্মযজ্ঞের। এতে অংশ নেন সাংসদ রাজদীপ রায়, বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল, কিশোর নাথ, এপিডিসিএলের ডিরেক্টর নিত্য ভূষণ দে, গুয়াহাটি থেকে আগত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আধিকারিক প্রণবজ্যোতি দাস, দীপজ্যতি বড়ুয়া, শিলচর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তরফে মঞ্জুল দেব, কাছাড় জেলা পরিষদ সভাপতি অমিতাভ রাই সহ অনেকেই।
রাজদীপ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংকল্প নিয়েছেন দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের ঘর থাকবে। ২০২২ সালের মধ্যে তার এই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে, আমরা গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে শহরাঞ্চলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে ঘর পাইয়ে দিতে বিভিন্ন কাজে লেগে পরেছি। রাজ্যে প্রথম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি হচ্ছে। যদিও এখানে ১৯২টি ফ্ল্যাট রয়েছে তবে আমার মনে হয় এটা অনেক কম হবে, কেননা মানুষ এই যোজনার অধীনে অনেক বেশি করে ফ্ল্যাট কিনবেন। আমি চাই আরও কনস্ট্রাকশন কোম্পানিগুলোকে এই প্রকল্পের অধীনে ফ্ল্যাট বানানো শুরু করা উচিত।”
পিএমওয়াই আধিকারিকরা জানান, কাছাড় জেলায় গ্রামাঞ্চলে এই প্রকল্পের অধীনে ঘর বানিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি শহরাঞ্চলে প্রায় ছয় হাজার ঘর বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া জেলার স্লাম এলাকাগুলো উন্নতির জন্য বিশেষ প্রকল্প রয়েছে। ভবিষ্যতে এগুলোর মাধ্যমে আরও ঘর বানানো সম্ভব।
নিত্য ভূষণ দে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, “কংগ্রেসের শাসনকালে এমন স্বপ্নই দেখা যেত না যেটা আজ বাস্তবে চোখের সামনে রয়েছে। তবু কংগ্রেসের নেতারা অকারণে বিভিন্ন ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করেন। এই প্রকল্পের অধীনে কেমন সুন্দর ঘর হয় আমি মধ্যপ্রদেশে গিয়ে দেখে এসেছি। এটা বাস্তবায়িত হলে পুরো এলাকা উন্নত হয়ে যাবে।”
বিরাট ফ্ল্যাটগুলো গড়ে তোলার আগে একটি উদাহরণস্বরূপ ছোট বাড়ি এলাকায় বানানো হয়েছে। রবিবার সকালে অতিথিরা ফিতা কেটে সেই ঘরের উদ্বোধন করেন এবং ফ্ল্যাটের ভূমি পূজনে অংশ নেন। বরাতপ্রাপ্ত নির্মান সংস্থা অ্যাডভান্টেজ রিয়েলিটির কর্মকর্তা স্বরূপকান্তি সিনহা, রবিন্দর গুলগুলিয়ারা জানান, প্রকল্পের নামকরণে বৈদিক রীতিকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে।
Comments are closed.